Raiganj | কুলিকে প্রতিমা নিরঞ্জন আর নয়, নদী বাঁচাতে উদ্যোগী রায়গঞ্জবাসী

Raiganj | কুলিকে প্রতিমা নিরঞ্জন আর নয়, নদী বাঁচাতে উদ্যোগী রায়গঞ্জবাসী

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: শহরের লাইফলাইনকে বাঁচাতে অভূতপূর্ব উদ্যোগ রায়গঞ্জবাসীর (Raiganj)। প্রতি বছর বিভিন্ন পুজোর মরশুমে স্থানীয় নদী কিংবা পুকুরের জলেই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যখন দস্তুর, তখন উলটো ছবি ধরা পড়ল রায়গঞ্জের কুলিক (Kulik) নদীর পাড়ে। পরিবেশ সচেতন হয়ে রায়গঞ্জ শহরের বহু বাসিন্দা আর নদীর জলে প্রতিমা বিসর্জন দিতে চাইছেন না। ফলে এবার অনেকেই তাঁদের বাড়ির সরস্বতী প্রতিমা কুলিকে বিসর্জন না দিয়ে নদীর পাড়েই কিছুটা দূরে একটি বড় বেদির উপর রেখে চলে গিয়েছেন। কুলিকের জলকে দূষণের হাত থেকে বাঁচাতেই তাঁদের এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

সারাবছর কুলিকে প্রায় হাজার খানেক প্রতিমা বিসর্জন হয়। প্রতিমার গায়ের রংয়ে থাকে লেড, জিঙ্ক, ক্যাডমিয়ামের মতো ভারী ধাতু। যা নদীর জলকে দূষিত করে তুলছে। এর ফলে কুলিক নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। চিরাচরিত অভ্যাস মতো সোমবার শহরের উকিলপাড়ার বাসিন্দা দীপক দাস তাঁর বাড়ির সরস্বতী প্রতিমা বিসর্জন দিতে হাজির হয়েছিলেন বন্দর শ্মশানঘাটে। কিন্তু নদীর কাছে গিয়ে তিনি দেখতে পান, বহু প্রতিমা নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়নি। পরিবর্তে সেই প্রতিমাগুলো একটি গাছের গোঁড়ায় উঁচু বেদির উপর সারিবদ্ধভাবে রেখে দেওয়া হয়েছে। তা দেখে দীপকবাবুও তাঁর বাড়ির প্রতিমা ওই বেদিতে রেখে চলে আসেন। দীপকবাবুর কথায়, ‘কুলিককে বাঁচাতে এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। কারণ, নদীর জল দূষিত হচ্ছিল। এমনিতেই পলি, কচুরিপানা, প্লাস্টিক, ফুল জমে জমে নদীর নাভিশ্বাস উঠেছে। তার উপর প্রতিমাও যদি বিসর্জন দেওয়া হয় তাহলে এই নদীকে বাঁচানো খুব কঠিন হয়ে পড়বে।’

সাধারণ মানুষের এই সচেতনতা অবশ্য একদিনে গড়ে ওঠেনি। কুলিক বাঁচাও কমিটি ছাড়াও বেশ কয়েকটি সংগঠন নদীতে নোংরা আবর্জনা ও প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রচার চালাচ্ছিল মানুষের মাঝে। প্রতিমা বিসর্জন রুখতে সংগঠনের সদস্যরা পাহারার ব্যবস্থাও করেছিলেন। তারই প্রভাবে এবছর সরস্বতীপুজোর পর থেকে দেখা যাচ্ছে, রায়গঞ্জের কুলিক নদীর বন্দর শ্মশানঘাট, খরমুজা ঘাট সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় নদীতে প্রতিমা বিসর্জন না দিয়ে নদীর পাশে নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দিচ্ছেন বাসিন্দারা।

পরিবেশকর্মী গৌতম তান্তিয়ার বক্তব্য, ‘আশাকরি আগামীতে নদীর জল দূষণ রোধের বিষয়ে রায়গঞ্জের মানুষ আরও সচেতন হবেন। প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ হওয়ায় কুলিকের দূষণ নিশ্চয় কমবে।’ মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতি বলেন, ‘খুবই ভালো উদ্যোগ। সরকারি কর্মীরাও এই বিষয়ে নজর রাখছেন। নদীতে প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ হলে অবশ্যই নদীর জল দূষণমুক্ত হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *