সৌম্যজ্যোতি মণ্ডল, চাঁচল: ধর্ম এবং আধ্যাত্মিকতার জন্য ভারতবর্ষে প্রথম পদ্মশ্রী সম্মান পেয়েছেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের স্বামীজি প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ ওরফে কার্তিক মহারাজ। পদ্মশ্রী সম্মান পাওয়ার পর রবিবার মালদার (Malda) চাঁচলের (Chanchal) ভগবতীপুরে একটি ধর্মীয় সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি। সেখানেই ধর্ম ও বর্তমান রাজনীতি নিয়ে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেন।
কার্তিক মহারাজের মতে, তাঁর পদ্মশ্রী পাওয়া নিয়ে যাঁরা রাজনীতিকরণ করছেন, তাঁরা সনাতনী আস্থায় আঘাত হানছেন। তবে বর্তমান রাজনীতি নিয়ে অত্যন্ত বিরক্ত কার্তিক মহারাজ। ধর্ম নিয়ে রাজনীতিতে তাঁর ঘোর আপত্তি। এই রাজনীতিকে নোংরা রাজনীতি আখ্যা দিয়েছেন তিনি। যদিও অদূরভবিষ্যতে তাঁর রাজনীতিতে পদার্পণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন কার্তিক মহারাজ। গত এক-দুই বছরে বঙ্গ রাজনীতিতে তাঁকে নিয়ে চর্চা চলছে। বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহে তাঁর বিজেপি-যোগ সামনে এসেছে। তৃণমূল হোক বা বামেরা এ নিয়ে কার্তিক মহারাজকে কটাক্ষ করে আক্রমণ শানিয়েছে। যদিও এদিন ঘুরিয়ে বাংলার হিন্দুদের বিজেপিকেই ভোট দেওয়ার বার্তা দেন তিনি।
বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে বিজেপি হিন্দুত্ব ইস্যুকেই তুরুপের তাস করছে। শুভেন্দু-সুকান্তদের গলায় উগ্র হিন্দুত্ববাদের কথা উঠে আসছে বারবার। সেই সময় কার্তিক মহারাজের বার্তা, ‘যে দল হিন্দুদের জন্য ভাববে, হিন্দুদের জন্য কাজ করবে, হিন্দুদের উচিত সেই দলকেই সমর্থন করা।’ তার কারণ হিসেবে তিনি সাম্প্রতিককালে হুমায়ুন কবীর, সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী, ফিরহাদ হাকিমদের বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তাঁর অভিযোগ, ‘এই মন্তব্যের কারণেই সামশেরগঞ্জ বা মোথাবাড়িতে এক শ্রেণির হাতে হিন্দুরা আক্রান্ত হয়েছে।’ কার্তিক মহারাজের বক্তব্য, ‘মালদা বা মুর্শিদাবাদে হিন্দু হয়ে জন্মানোটা তো পাপ নয়। আমি সমগ্র সন্ন্যাসী সমাজকে বলব, ভক্তদের বলতে, একমাত্র যে দল হিন্দুদের কথা ভাববে, ভোট যাতে তাদেরই দেওয়া হয়। দেশ যদি সত্যি সেকুলার হয়, তবে তো আজান এবং হরিনাম একসঙ্গে হলে কোনও সমস্যা নেই।’ শেষে বর্তমান রাজনীতি নিয়ে রবি ঠাকুরের উক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জাতি প্রেম নাম ধরি প্রচণ্ড অন্যায়, ধর্মেরে ভাসাতে চাই বলের বন্যায়।’