সৌরভ ঘোষ, মালদা: ফলের রাজা আম (Mango) মোটামুটি সকলেরই প্রিয় ফলের তালিকায়। তাই এই ফলকে এবার সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে আরেক নতুন দিগন্ত দেখাচ্ছে আম ঐতিহ্যের শহর মালদা (Malda)। শুধুমাত্র আম বিক্রির গণ্ডি পেরিয়ে এবার শহরের উদ্যোগী ব্যবসায়ী দম্পতি প্রীতা চিতলাঙ্গীয়া ও প্রসূন চিতলাঙ্গীয়া মালদার আমের ফুডপ্রসেসিং-এর মাধ্যমে নতুন বায়ো প্রোডাক্ট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। স্বনির্ভরতার দিশা দেখাচ্ছেন ক্ষুদ্র আমচাষি থেকে বেকারদের। ম্যাংগো পাল্প এর মাধ্যমে আমরস সংরক্ষণ করে ইতিমধ্যে বাজারজাত হয়েছে ম্যাংগো জুস ও আমসত্ত্ব। আগামী মার্চ মাস থেকেই ম্যাংগো ক্যান্ডি, ম্যাংগো পাউডারসহ বিভিন্ন রকমের প্রক্রিয়াজাত পণ্য বাজারজাত করতে উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা।
মালদার এই ব্যবসায়ী আইআইটি খড়্গপুরে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে আম প্রক্রিয়াকরণের নতুন প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছেন। তঁার এই প্রয়াসে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে মালদা উদ্যানপালন দপ্তরও। উদ্যানপালন অধিকর্তা সামন্ত লায়েকের মতে, ‘আমের সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে কেবল ব্যবসায়িক প্রসার নয়, মালদার ঐতিহ্যবাহী আমকে বিশ্ববাজারেও পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। আমরা সবসময় এহেন উদ্যোগীদের পাশে সবরকমভাবে থাকব।’
প্রধানমন্ত্রী ফর্মালাইজেশন মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ প্রকল্পের সহায়তা প্রধানমন্ত্রী ফর্মালাইজেশন মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ প্রকল্পের আওতায় ঋণ সুবিধা পেয়ে সুস্থানি মোড়ে পঁাচ টন আম প্রক্রিয়াকরণ কারখানা গড়ে তুলেছেন প্রসূন। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় আমের রস সংরক্ষণ করে তা বাজারজাত করা শুরু হয়েছে। গুণমান বজায় রেখে প্রক্রিয়াজাত করা এই পণ্যগুলির প্রতি ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
ব্যবসায়ী দম্পতি প্রসূন চিতলাঙ্গীয়ার কথা অনুযায়ী, ‘মালদার আম নিয়ে নতুন এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই সফলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য শুধু ব্যবসা নয়, বরং আম সংরক্ষণের মাধ্যমে সারাবছর তা বাজারে সরবরাহ করা। এর ফলে একদিকে মালদার খ্যাতি বাড়বে, অন্যদিকে ক্ষুদ্র চাষি ও বেকারদের জন্য স্বনির্ভরতার নতুন দিগন্ত খুলে যাবে।’
মালদার ঐতিহ্যবাহী আমকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই নতুন ফুড প্রসেসিং উদ্যোগ শুধু রাজ্যের নয়, দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করছেন উদ্যানপালন দপ্তর থেকে বিশেষজ্ঞরা।