মালদা: স্নাতক স্তরের প্রতিটি সেমিস্টারের ভর্তির ফি বেড়ে যাওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভে শামিল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (Gaur banga College) ছাত্র-ছাত্রীরা। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। এই বিক্ষোভের মাঝে টিএমসিপি-র বহিরাগতরা এসে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। দু’পক্ষের মধ্যে অশান্তির জেরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। অসুস্থ হয়ে পড়েন একাধিক পড়ুয়া। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও এখনও চাপা উত্তেজনা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে।
নয় বছর পরে স্নাতকোত্তরের ফি দ্বিগুন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দু’মাস আগেও ছাত্র বিক্ষোভের জেরে ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। তবে উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিশ্বজিৎ দাস। বৈঠকে ফি কমানো নিয়ে সিদ্ধান্ত না নিয়ে, এদিন থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়। তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ।
ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ, ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে কলা বিভাগে ভর্তি ফি ছিল ২৩০০ টাকা। এখন তা হয়েছে ৪৮২০ টাকা। বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি ফি ছিল ৩৭২০ টাকা কিন্তু এখন তা হয়েছে ৬৮২০ টাকা। দু’মাস আগে রেজিস্ট্রার তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ভর্তি ফি বাড়ানো হবে না। কিন্তু হঠাৎ দু’দিন আগে নোটিশ জারি করে ভর্তি ফি বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে। তারই প্রতিবাদে তাঁদের আন্দোলন শুরু হয়। অভিযোগ, সেই আন্দোলনের মাঝেই বহিরাগতরা এসে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হামলা চালায়। জোরপূর্বক তাঁদের সরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট খুলে দেন। এর ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন বহু ছাত্র-ছাত্রী। অসুস্থ অবস্থায় এক ছাত্রী বলেন, ‘তৃণমূলের দালালরা এসে আমাদের ওপর মারধর করে অবরোধ তুলে দিল। ওরা গৌড়বঙ্গের কেউ নয়, ওরা বহিরাগত। পুরনো ফি থেকে ১১০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের পড়াশোনাটাও ঠিক মতো করায় না। অথচ, সিসিটিভি, জল এসবের জন্য আমাদের ফি বাড়িয়ে দিচ্ছে।’
অন্যদিকে, যাঁদের বিরুদ্ধে বহিরাগত বলে অভিযোগ উঠছে, তাঁদের একাংশ বলেন, ‘সকাল থেকে কলেজের গেট বন্ধ ছিল। এটা তো পিজি ছাত্র-ছাত্রীদেরই বিশ্ববিদ্যালয় নয়। অনান্য কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এসেছিল কাজের জন্য। তারা এসে দেখে কলেজের গেট বন্ধ। তাদের সঙ্গেই ধস্তাধস্তি হয়েছে।’
এদিকে খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ (Police) ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এখনও চাপা উত্তেজনা চলছে।