কল্লোল মজুমদার, মালদা: অন্যান্য স্থানের সঙ্গে শুক্রবার থেকে মালদা শহরেও শুরু হয়েছে দুয়ারে সরকার। আর তার জেরেই বন্ধ থাকবে স্কুল। স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন নোটিশে চোখ কপালে উঠেছে অভিভাবকদের। শহরের চিন্তামণি চমৎকার, বার্লো বালিকা বিদ্যালয়ের মতো অন্যতম ঐতিহ্যশালী স্কুলগুলির পাশাপাশি একাধিক স্কুলে ‘ক্লাস সাসপেন্ড’ করে দেওয়া হয়। পড়াশোনা লাটে তুলে অভিভাবকদের উদ্দেশে স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন বিজ্ঞপ্তি নিয়ে শুরু হয়েছে বিরোধীদের কটাক্ষ। যদিও বিষয়টি জানা নেই বলে মন্তব্য করেছেন মালদা জেলা শিক্ষা দপ্তরের ডিআই বাণীব্রত দাস। শনিবার শহরের চারটি স্কুল চিন্তামণি চমৎকার, অক্রুরমণি করোনেশন সহ কয়েকটি স্কুলে দুয়ারে সরকার অনুষ্ঠিত হয়। চিন্তামণি স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হলেও, অক্রুরমণিতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার হিট অনুষ্ঠিত হয়।
স্কুল বন্ধ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিন্তামণি স্কুলের এক পড়ুয়ার অভিভাবকের বক্তব্য, ‘স্কুলে না হয়ে পাড়ার ক্লাব বা কমিউনিটি হলগুলিতে দুয়ারে সরকার আয়োজন করা হলে বাচ্চাদের পড়াশোনার ক্ষতি হয় না।’
একই মন্তব্য বার্লো স্কুলের এক অভিভাবিকারও। তাঁর দাবি, ‘এমনিতেই সারাবছর ক্লাস হয় না বললেই চলে। তারপর কখনও ভোটের জন্য পুলিশ থাকে, কখনও ভিআইপিদের মালদা সফরের জন্য স্কুল ভবন নিয়ে নেওয়া হয়। আবার অনেক স্কুল নিয়ে নেওয়া হয় বন্যার সময় ত্রাণশিবিরের জন্য। তাই সরকারি অনুষ্ঠানের জন্য এভাবে স্কুলগুলি ব্যবহার না করাই ভালো।’
এই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির মুখপাত্র অজয় গঙ্গোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘দুয়ারে সরকার সামাজিক প্রকল্প। সমাজের মানুষের লাভ হবে, ভালো কথা। কিন্তু যারা সমাজ গঠন করবে, ভবিষ্যতের আলো দেখাবে, তাদের বঞ্চিত করে স্কুল সম্পূর্ণরূপে ছুটি দেওয়া এটা সাধারণ মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া অসুবিধেজনক। যদিও এই সরকার কোনও আইনকানুনের ধার ধরে না। সরকারি প্রকল্প চলুক, স্কুল বন্ধ না রেখে চলুক।’
চিন্তামণি স্কুলের তরফে কোনও মন্তব্য করা না হলেও অক্রুরমণি করোনেশন ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অজয়কৃষ্ণ রায় বলেন, ‘আজ আমাদের স্কুলে দুয়ারে সরকার শিবির বসেছিল। তবে পড়ুয়াদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ট্রায়াল থাকায় ক্লাস বন্ধ ছিল। এর সঙ্গে দুয়ারে সরকার শিবিরের কোনও সম্পর্ক নেই।’