পঙ্কজ মহন্ত ও জসিমুদ্দিন আহম্মদ, বালুরঘাট ও মালদা: ‘বালুরঘাটে হবে না।’ বিমানবন্দর ইস্যুতে রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে ঠিক এই জবাবই দিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বিমানবন্দর ঘিরে বালুরঘাট (Balurghat) যখন হতাশ, তখন মালদার জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া অবশ্য আশার কথা শুনিয়েছেন। মালদায় চলতি বছরেই বিমান পরিষেবা (Air service) চালু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার উত্তরকন্যায় বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বিপ্লব মিত্র জানতে চান বালুরঘাট বিমানবন্দর কবে হবে। তখনই মুখ্যমন্ত্রী সাফ জবাব দিয়ে দেন, ‘বালুরঘাটে হবে না।’ মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শোনা যায় ‘সিঙ্গল ইঞ্জিন থেকে ডাবল ইঞ্জিন’ প্রসঙ্গও। অবশ্য এবিষয়ে বিপ্লব বলেন, ‘সিঙ্গল ইঞ্জিন ও ডাবল ইঞ্জিন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কী বোঝাতে চেয়েছেন, সেটা তিনি নিজেই বলতে পারবেন। এখানে আমার কিছু বলার নেই।’
বর্তমানে বালুরঘাট বিমানবন্দরের ১৩৮০ মিটার রানওয়ে তৈরি রয়েছে। কিন্তু নবান্নের তরফে জানানো হয়েছিল, রাজ্যের বিমানবন্দরগুলি শুধু যাত্রী পরিবহণ নয়, বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও তা ব্যবহার করা হবে। তাই কমপক্ষে ৯০ আসনসংখ্যা বিশিষ্ট বিমান ওঠানামার জন্য পর্যাপ্ত রানওয়ে বানানোর সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত রানওয়ে বানানোর জন্য মোট ১৮০০ মিটার জমির প্রয়োজন। ফলে বড় বিমান নামানোর ক্ষেত্রে এখনও আরও প্রায় ৪০০ মিটার রানওয়ে প্রয়োজন। কীভাবে রানওয়ে বাড়ানো যাবে, তা খতিয়ে দেখতে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার সদস্যরাও আসেন। কিন্তু এখন সেই প্রকল্প বিশবাঁও জলে। ভার্চুয়াল বৈঠকে বিপ্লব মিত্রকে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে যেন কফিনে শেষ পেরেক পোঁতা হয়ে গেল।
এদিকে, মালদা বিমানবন্দরের রানওয়ের কাজ শেষ হয়েছে বছর পাঁচেক আগে। কিন্তু এখনও চালু হয়নি বিমান পরিষেবা। মালদার জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘মালদায় বিমান পরিষেবা চলতি বছরেই চালু হবে। বিমানবন্দরের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। আমরা এনিয়ে প্রোজেক্ট তৈরি করে রাজ্যে পাঠিয়েছিলাম। সরকারের তরফে সবুজ সংকেত মিলেছে। দ্রুত কাজ শেষ করতে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই টাকায় বিমানবন্দরের টিকিট কাউন্টার, লাউঞ্জ, ফুড জোন তৈরি করার পাশাপাশি উন্মুক্ত সীমানা প্রাচীরের কাজ হবে।’ ইতিমধ্যেই প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মালদা বিমানবন্দরের রানওয়ে পূর্বদিকে বাড়ানো হয়।
মালদা শহরের বাসিন্দা তথা ব্যবসায়ী কমলেশ বিহানী বলেন, ‘মালদায় বিমান পরিষেবা চালু হলে প্যাসেঞ্জারের অভাব হবে না। প্রতি বছরই আমরা শুনে আসছি, মালদায় বিমান পরিষেবা চালু হবে। কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে কোথায়?’
উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, ‘কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী কে রামমোহন নাইডুর সঙ্গে আমি দেখা করেছি, যাতে মালদা বিমানবন্দরকে চলাচলের উপযোগী করে বিমান পরিষেবা দ্রুত চালু করা যায়।’ দক্ষিণ মালদার কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান চৌধুরী বলেন, ‘মালদা বিমানবন্দরে বিমান পরিষেবা চালুর জন্য সংসদে দাবি তুলেছি।’