বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: বৌভাত খেতে এসে বরপক্ষের হাতে মার খেয়ে ফিরতে হল কনেযাত্রীদের। সোমবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জের (Raiganj) বারদুয়ারি সংলগ্ন মধুপুর এলাকায়। অভিযোগ, কনেযাত্রীরা ফিরে যাওয়ার সময় মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে একদল তরুণ তাঁদের ওপর লাঠি, রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর জখম হন কনেপক্ষের তিন তরুণ। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হামলাকারী পাঁচজনের নামে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বৌভাতে তরুণীর সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগকে ঘিরে বিবাদের সূত্রপাত হয়। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনুষ্ঠান বাড়ির সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ২৪ তারিখে বিহারের বিঘোরের কনের সঙ্গে রায়গঞ্জের বারদুয়ারির বাসিন্দা এক তরুণের বিয়ে হয়। সোমবার ছিল বৌভাতের অনুষ্ঠান। আমন্ত্রণ পেয়ে সেই অনুষ্ঠানেই যোগ দিতে এসেছিলেন কনের আত্মীয়-পরিজনরা। বৌভাত চলাকালীন ডিজের তালে নাচানাচি করছিলেন দুই পক্ষেরই একদল তরুণ-তরুণী। সেই সময় বরপক্ষের তরুণীদের কনেপক্ষের কয়েকজন তরুণ ধাক্কাধাক্কি করেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বচসা বেধে যায়। অন্যদের মধ্যস্থতায় তখনকার মতো গোলমাল থেমে গেলেও ঘটনার সূত্রপাত সেখানেই।
অভিযোগ, খাওয়াদাওয়ার পর কনেযাত্রীরা যখন ফিরে যাচ্ছিলেন সেই সময় পিছুধাওয়া করে মোটরবাইকে থাকা কনেপক্ষের চার তরুণের ওপর হামলা চালায় বরপক্ষের একদল তরুণ। হামলাকারীরা লোহার রড দিয়ে মেরে এক তরুণের মাথা ফাটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ধারালো বস্তু দিয়ে আঘাত করে খুনেরও চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। বাসে থাকা কনেযাত্রীরা পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে আহত তিন তরুণকে উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিকেলে ভর্তি করেন।
মেডিকেলে চিকিৎসাধীন জখম তরুণ পঙ্কজকুমার দাসের মা চন্দনা দাস বলেন, ‘আত্মীয়ের বৌভাতের অনুষ্ঠানে একটা গোলমাল বেধেছিল। সেটা সেখানেই মিটে যায়। কিন্তু বৌভাত খেয়ে বাড়ি ফেরার সময় লোহার রড নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায় একদল তরুণ। তাতে আমার ছেলে সহ মোট তিনজন জখম হয়েছে।’
ঘটনার পর বারদুয়ারির বাসিন্দা শুভ বর্মন, বাপি মাঝি, ভাস্কর সাহা সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় কনেপক্ষের তরফে। অভিযুক্তরা সকলেই বরের পরিজন বলে জানা গিয়েছে। অন্যতম অভিযুক্ত শুভ বর্মনের অবশ্য বক্তব্য, ‘আমাদের কেউ হামলা চালায়নি। কনেপক্ষের যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। বৌভাতের অনুষ্ঠানে ডিজে বাজছিল। সেখানে বরপক্ষের তরুণীদের ধাক্কাধাক্কি করা হয়। তা নিয়েই গোলমাল বাধে। কিন্তু আমি সেই গণ্ডগোলে ছিলাম না।’