Raiganj | দশমী শেষে বালাইচণ্ডীর পুজো খাদিমপুরে

Raiganj | দশমী শেষে বালাইচণ্ডীর পুজো খাদিমপুরে

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


বিশ্বজিৎ সরকার, হেমতাবাদ: দেবী দুর্গার বিসর্জনের পর অন্যত্র যখন বিষাদের সুর ভেসে বেড়ায়, সেই সময় বালাইচণ্ডীর পুজোয় মেতে ওঠেন রায়গঞ্জ (Raiganj) ব্লকের কমলাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিমপুরের বাসিন্দারা। দশ হাজার পরিবারের সম্মিলিত উদ্যোগে দশমীর রাত থেকে শুরু হয় এই পুজো। বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে শুরু হওয়া এই পুজো চলবে রবিবার পর্যন্ত। এলাকার প্রবীণ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গ্রামবাসীর মঙ্গলকামনায় এলাকায় বংশপরম্পরায় বালাইচণ্ডীপুজো হয়ে আসছে। প্রাচীন রীতিনীতি, আচারনিষ্ঠা মেনে প্রতিবছর প্রচুর ভক্ত এই পুজোয় শামিল হন।

পুজো কমিটির সভাপতি রমেন বর্মনের কথায়, ‘দুর্গাপুজো নয়, আমরা সারা বছর ধরে এই বালাইচণ্ডীর পুজোর দিকেই তাকিয়ে থাকি। দশমীর রাত থেকে টানা পাঁচদিন নতুন পোশাক পরে পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন। অবশ্য দেবী বালাইচণ্ডীর প্রতিমায় চার হাত রয়েছে। অসুর, মহিষের কোনও অস্তিত্ব নেই। সিংহের পিঠে বালাইচণ্ডীর পাশে লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতীর প্রতিমা থাকে।’

বালাইচণ্ডী মন্দিরের পুরোহিত বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘৫০০ বছর আগে দশমীতে এই গ্রামে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রচুর ফসল, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বহু মানুষ মারা যান। সেই থেকেই সমাজের মঙ্গলকামনায় বাসিন্দারা বালাইচণ্ডীর পুজো শুরু করেন। রীতি অনুযায়ী যাতে বাসিন্দারা পুজোর্চনা করতে পারেন, সেজন্য প্রতিমা বিসর্জন না দিয়ে বট-পাকুড় গাছের প্রাচীন মন্দিরে রেখে দেওয়া হয়।’

প্রতি বছর বিশ্বকর্মাপুজোর পরের দিন পুরোনো দেবীর বিসর্জন হয়। বিসর্জনের পরে মৃৎশিল্পীদের প্রতিমার বরাত দেওয়া হয়। বংশপরম্পরায় মৃৎশিল্পীরা এই প্রতিমা গড়েন। পুরোহিতরাও বংশপরম্পরায় পুজো করেন। পুজোর তিনদিন পুরোহিত মঙ্গলযজ্ঞ করেন। এরপর দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের উৎসর্গ করা পাঁঠা, পায়রা মিলিয়ে ২০০টি বলি হয়। বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে কয়েকশো ভক্ত অঞ্জলি দেন। প্রসাদ হিসেবে ভক্ত ও বাসিন্দাদের মধ্যে খিচুড়ি, মিষ্টি ও ফল বিলি করা হয়। পুজো উপলক্ষ্যে এক সপ্তাহ ধরে মেলা ও যাত্রাপালার আয়োজন করা হয় বলে  মন্দিরের পুরোহিত জানিয়েছেন।

পুজো কমিটির সম্পাদক সুবল বর্মন, পুজো কমিটির কার্যনির্বাহী সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ সুরেশচন্দ্র বর্মন বলেন, ‘পুজো মোট তিনদিন হবে। বলি প্রথা আমাদের এখনও চালু রয়েছে। প্রথম দিনই পাঁঠা, পায়রা বলি দেওয়া হয়। পুজোয় চাঁদা তোলা হয় না। গ্রামবাসীরাই পুজো চালানোর দায়িত্ব বহন করেন।’ এই পুজো দেখতে শুধু রায়গঞ্জ শহর নয়, দূরদূরান্ত থেকে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *