সুস্বাদু খাবারের কথা মনে করলেই মিষ্টির কথা উঠতে বাধ্য। রায়গঞ্জের সেরা মিষ্টি ছানার পায়েস। এই পায়েসের স্বাদে বুঁদ শহরবাসী। এই স্বাদের টানে শহরের বাইরের থেকে এসেও অনেক খাদ্যরসিক ছানার পায়েস চেখে যাচ্ছেন। ছানার পায়েসের সঙ্গে রায়গঞ্জের সম্পর্ক তুলে ধরেছেন রাহুল দেব।
রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ (Raiganj) শহরের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে একাধিক মিষ্টির দোকান। অধিকাংশ মিষ্টির দোকানে মেলে ছানার পায়েস। তবে একাংশ শহরবাসীর মতে কমবেশি সব দোকানে ছানার পায়েস পাওয়া গেলেও দেহশ্রী মোড় সংলগ্ন একটি মিষ্টির দোকানের ছানার পায়েস সেরা। আবার আরেক দলের মতে কলেজপাড়ার একটি দোকানেও দারুণ স্বাদের ছানার পায়েস পাওয়া যায়। দুই জায়গাতেই রায়গঞ্জ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা এমনকি বিহার থেকেও ক্রেতারা আসেন ছানার পায়েসের টানে। এই মুহূর্তে শহরে ৩২০ টাকা কেজি দরে ছানার পায়েস বিক্রি হচ্ছে।
কীভাবে তৈরি হয় এই সুস্বাদু ছানার পায়েস? বড় কড়াইয়ে দুধ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে তা ফুটিয়ে ফুটিয়ে ক্ষীর বানানো হয়। এর পাশাপাশি চলতে থাকে ছানা বানানোর কাজ। ছানা তৈরি হয়ে গেলে সেখান থেকে ছোট ছোট ছানার বল তৈরি করে সেগুলিকে চিনির শিরার মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখার পর ক্ষীরে ডোবানো হয়। এভাবেই তৈরি হয় ছানার পায়েস। শীতকালে পাওয়া যায় গুড়ের ছানার পায়েস। তার জন্য ছানার বলগুলিকে গুড় দিয়ে তৈরি শিরার মধ্যে ডোবানো হয়।
দেহশ্রী মোড় সংলগ্ন মিষ্টির দোকানের ব্যবসায়ী সঞ্জিত পাল বলেন, ‘বহু বছর ধরে আমাদের দোকানে ছানার পায়েস তৈরি হচ্ছে। এই পায়েস যাঁরা একবার চেখেছেন তাঁরা এর স্বাদের টানে বারবার দোকানে আসেন। প্রতিদিন সন্ধ্যার মধ্যে সমস্ত ছানার পায়েস বিক্রি হয়ে যায়।’ কলেজপাড়ার মিষ্টি বিক্রেতা মন্টু ঘোষের কথায়, ‘প্রতিদিন দোকানে ২২ কেজি ছানার পায়েস বিক্রি হয়। শীতকালে গুড়ের এবং চিনির দু’ধরনের ছানার পায়েস বিক্রি করি। অন্যান্য সময় শুধু চিনির ছানার পায়েস বিক্রি হয়। স্বাদের দিক থেকে আমরা কোনও আপোস করি না।’
তবে ছানার পায়েসের জন্য জিআই ট্যাগ রায়গঞ্জের পাওয়া উচিত বলে মনে করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। পশ্চিম দিনাজপুরের চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শংকর কুণ্ডু বললেন, ‘রায়গঞ্জের মিষ্টিগুলির মধ্যে ছানার পায়েস অন্যতম। রাজ্য সরকারের সঙ্গে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের রাজ্য কমিটির এবিষয়ে কথা চলছে।’ শহরের বাসিন্দা সুব্রত বণিক বলেন, ‘ছানার পায়েস খেতে অসাধারণ লাগে। আমাদের রায়গঞ্জে যেমন ছানার পায়েস পাওয়া যায় তেমনটা আর কোথাও মেলে না। বাড়িতে অতিথি এলে কখনও বা নিজেদের জন্য মাঝেমধ্যে এই ছানার পায়েস কিনে আনি।’