বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: চুরি করতে এসে ভূরিভোজ সারল চোর! ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ শহরের দেবীনগর শ্যামপুর মোড় এলাকায়। চোরের কাণ্ডকীর্তি দেখে সকলেই হতবাক।
বুধবার দুপুরে শ্যামপুর মোড়ে রীতা দাসের বাড়িতে কেউ ছিলেন না। সেই সুযোগেই বাড়ির পিছনের দরজার তালা ভেঙে ঘরে ঢোকে একদল চোর। কিন্তু ঘরে রান্না করে রাখা খিচুড়ির গন্ধ নাকে যেতেই কিছুক্ষণের জন্য চুরির কথা ভুলে যায় চোরেরা। লোভ সামলাতে না পেরে হাঁড়ির খিচুড়ি সাবার করতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। ডিমের কালিয়া, ওমলেট ও তরকারি সহযোগে খিচুড়ি দিয়ে ভূরিভোজ করার পর আলমারির তালা ভেঙে একাধিক সামগ্রী চুরি করে চম্পট দেয় চোরের দল। বাড়ি ফিরে চুরির কথা জানতে পারার পরেই রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বাড়ির মালিক রীতা দাস।
অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। সিসি টিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে এক তরুণকে চিহ্নিত করে পুলিশ। এরপরেই ওই চুরির ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে তাপস দাস নামে ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি ওই এলাকাতেই। ধৃতের হেপাজত থেকে একাধিক চোরাই সামগ্রী উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের খাতায় তাপসের বিরুদ্ধে চুরি সহ একাধিক অপরাধমূলক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার ধৃতকে রায়গঞ্জ মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন। রায়গঞ্জ সিজেএম কোর্টের সরকারি আইনজীবী নীলাদ্রি সরকার বলেন, ‘ধৃতের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিচারক জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।’
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ধৃত তাপসের সঙ্গে ওই চুরি কাণ্ডে আরও অন্তত দুইজন দুষ্কৃতী ছিল। সিসি টিভির ফুটেজ দেখে বাকিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। বাড়ির মালিক রীতা দাস বলেন, ‘রান্না করে বাজারে গিয়েছিলাম। বাজার থেকে ফিরে দেখি, পিছনের ঘরের দরজা খোলা। একাধিক সামগ্রী চুরি করার পাশাপাশি ঘরের রান্না করা সব খাবারও হাওয়া। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। পুলিশ একজনকে ধরেছে। কিন্তু আমি শুধু ভাবছি, এমনও চোর হয়!’