Raiganj | গাঁজার ছিলিম হাতে দেখলেই জরিমানা, শাস্তির নিদান দিয়ে পোস্টারিং গ্রামে

Raiganj | গাঁজার ছিলিম হাতে দেখলেই জরিমানা, শাস্তির নিদান দিয়ে পোস্টারিং গ্রামে

শিক্ষা
Spread the love


দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: গ্রামকে নেশামুক্ত করতে এগিয়ে এসেছিলেন এলাকারই তরুণরা। কাউকে গাঁজার ছিলিম হাতে দেখলেই তাকে ধরে সালিশি বসিয়ে জরিমানা করা হবে নগদ ৫০০ টাকা। গ্রামের দেওয়ালে দেওয়ালে এমন পোস্টার সেঁটে রীতিমতো নজরদারিও শুরু করেছিলেন একদল তরুণ। কিন্তু তাতেও গাঁজার ধোঁয়া বন্ধ করা যায়নি রায়গঞ্জের অভর গ্রামে। এই ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনেরও পূর্ণ সহযোগিতা না পেয়ে হতাশ ওই তরুণরা।

রায়গঞ্জ ব্লকের অভর গ্রামে গেলেই চোখে পড়বে দেওয়ালে লেখা পোস্টার – ‘এখানে গাঁজা খাওয়া নিষেধ। ধরা পড়লে ৫০০ টাকা জরিমানা।’ কিন্তু ওই নির্দেশিকাই সার। যে কোনও দিন গ্রামে ঢুকলে দেখা যায়, গাঁজার নেশায় বুঁদ বেশ কয়েকজন। কিছু বাইরের লোকজনও এসে যোগ দিচ্ছে ওই আসরে। গ্রামে প্রায় ২০ ঘর রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। এই সমাজেরই একটা বড় অংশের মানুষ গাঁজার নেশায় আসক্ত। তাঁদের দেখাদেখি গ্রামের তরুণদেরও একাংশ গাঁজায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন।
গ্রামের মানুষের এমন সর্বনাশ দেখে সেই পথ থেকে তাঁদেরকে সরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন গ্রামেরই বাবলু রাজবংশী, দীপক রাজবংশী সহ বেশ কয়েকজন তরুণ। তাঁরাই একদিন মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেন, গ্রামকে নেশামুক্ত করতে হবে। কিন্তু কীভাবে? বাবলু বলেন, ‘আমরা সবাই মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিই, গ্রামে কেউ গাঁজা সেবন করলেই তাঁকে ৫০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। সেই জরিমানার টাকা এলাকার গরিব ও দুঃস্থদের প্রয়োজনে খরচ করা হবে।’

তরুণদলের এই উদ্যোগে সহমত পোষণ করে এগিয়ে আসেন গ্রামের মহিলারাও। পাড়ায় নজরদারি চালানোয় কিছুদিনের জন্য গ্রামে গাঁজার ধোঁয়া ওড়া বন্ধ হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবাদী তরুণদের মধ্যে কয়েকজন ভিনরাজ্যে কাজে চলে যেতেই নজরদারি শিথিল হয়ে যায়। তারপর থেকে আবার রমরমা শুরু হয় গাঁজাখোরদের।
দীপক রাজবংশী হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘করোনার সময় থেকে এলাকায় গাঁজাখোরদের উপদ্রব শুরু হয়। আমরা অনেক চেষ্টা করেও তা বন্ধ করতে পারলাম না। পুলিশ মাঝেমধ্যে এসে দুই-একজনকে তুলে নিয়ে গেলেও একদিন পর ছেড়ে দেয়। গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’ প্রতিবাদী তরুণরা জানান, জরিমানার নিদান দেওয়া হলেও কাউকে জরিমানা করা সম্ভব হয়নি। বাইরের লোকজনদের দাপটে কিছু করা যাচ্ছে না বলে তাঁদের দাবি। কারণ কিছু বলতে গেলেই প্রতিবাদীদের সঙ্গে নেশাসক্তদের বচসা গণ্ডগোল বেঁধে যাচ্ছে। ফলে ফের রোজ সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অভর গ্রামে চলছে বহিরাগত নেশাখোরদের আনাগোনা।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আলতাব হোসেন বলেন, ‘গ্রামকে নেশামুক্ত করতে আমরা অনেকবার মানুষকে নিয়ে মিটিং করেছি। সেই চেষ্টা এখনও চালিয়ে যাচ্ছি।’

তবে গ্রামের তরুণদের উদ্যোগকে সফল করতে পুলিশি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমাদের পুলিশকর্মীরা নিয়মিত অভিযান চালাবেন ওই এলাকায়। গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *