সৌরভকুমার মিশ্র, হরিশ্চন্দ্রপুর: হরিশ্চন্দ্রপুরে আবার শিয়ালের আক্রমণের ঘটনা সামনে এল। এবারে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার গাঙ্গর গ্রামে শুক্রবার ভোররাতে একটি পোলট্রি ফার্মে শিয়ালের দলের হানার ঘটনা সামনে এল। শিয়ালের আক্রমণে মারা পড়েছে প্রায় ৫০০টি মুরগি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই গ্রামের নির্জন এলাকায় একটি চাষের খেতে স্থানীয় চাষি আবুল কালামের মুরগির ফার্ম ছিল। আর সেখানে প্রায় দুই হাজার মুরগি রাখা ছিল। গত শুক্রবার দুপুর নাগাদ গিয়ে কালাম দেখেন তাঁর ফার্মের জালের বেড়া কেটে দেওয়া হয়েছে। ভেতরে কয়েকশো মুরগি মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রত্যেকটি মুরগির দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন। এরপরই অনুমান করা হয় রাতে শিয়ালের আক্রমণের ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে। কালামের কথায়, ‘ঘটনাটি একটি শিয়াল নয়, শিয়ালের দলই ঘটিয়েছে।’
কালাম জানালেন, শিয়ালের হানায় পাঁচ শতাধিক মুরগি মারা গিয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ লক্ষাধিক। কোম্পানির অধীনে মুরগিগুলির প্রতিপালন করছিলেন কালাম। কালাম বললেন, ‘শুক্রবার আমার হঠাৎ জ্বর আসায় ফার্ম থেকে বাড়ি চলে যাই। সকালে এসে এই ঘটনা দেখতে পাই। মুরগিগুলি পূর্ণবয়স্ক হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি কোম্পানিগুলো থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা হয়েছিল। কোম্পানির সঙ্গে কমিশনে কাজ করতাম। প্রচুর টাকার ক্ষতি হয়ে গেল।’
হরিশ্চন্দ্রপুর বন দপ্তর সূত্রে খবর, বছরের এই সময় থেকে শিয়ালের প্রজনন বেড়ে যায়। তাই এলাকায় শিয়ালের উপদ্রব দেখা যায়। তবে বন দপ্তর সজাগ রয়েছে। জেলা বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্য শিক্ষক স্বর্ণকমল চক্রবর্তী বলেন, ‘হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় কয়েক বছর ধরেই শিয়ালের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। কিন্তু সে তুলনায় বনজঙ্গল ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। বাসস্থানের সঙ্গে শুরু হয়েছে শিয়ালের খাদ্যসংকট। তাই খাবারের খোঁজে এরা বারেবারে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। শীত পড়লে এই প্রবণতা আরও বাড়বে।’
স্থানীয় বাসিন্দা প্রকাশ দাস জানালেন, বছর দুয়েক আগে শিয়ালের আক্রমণে হরিশ্চন্দ্রপুরের হরদমনগর গ্রামে প্রায় ৭০ জন মানুষ জখম হয়েছিলেন। কয়েক বছর ধরে হরিশ্চন্দ্রপুরের শিয়ালের আক্রমণের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় চিন্তায় রয়েছেন বাসিন্দারা।