পতিরাম: হায়দরাবাদে কাজে গিয়ে রহস্যমৃত্যু পতিরামের পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant Employee)। জানা গিয়েছে, মৃত ওই শ্রমিকের নাম সুরজিৎ মাহাতো (৩০)। বাড়ি পতিরামের মাঝিয়ান ভুঁইয়া পাড়ায় (Patiram)। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই স্তম্ভিত পরিবার ও গ্রামবাসী।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বোল্লার এক ঠিকাদার আজাহার মণ্ডলের কাছ থেকে অগ্রিম ২০ হাজার টাকা নিয়ে গত সোমবার হায়দরাবাদে কাজে গিয়েছিলেন সুরজিৎ। বুধবার হায়দরাবাদে পৌঁছে স্ত্রীকে জানিয়েওছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকেই নিখোঁজ হয়ে পড়েন তিনি।
সুরজিতের সঙ্গে ওই একই গ্রাম থেকে আরও কয়েকজন হায়দরাবাদ গিয়েছিলেন। তাঁরাই জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার কাজের জায়গা থেকে কাউকে কিছু না জানিয়েই অন্য এক শ্রমিকের সঙ্গে কোথাও চলে যান সুরজিৎ। এরপর শুক্রবার বিকেলে অন্য একটি নম্বর থেকে স্ত্রীকে ফোন করে তিনি জানান, তিনি বাড়ি ফিরবেন। সেই সঙ্গে দ্রুত দু’হাজার টাকা পাঠাতে হবে বলেও জানান তিনি। এরপরই তড়িঘড়ি করে শুক্রবারই সেই টাকা আত্মীয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়। কিন্তু আজ সকালেই পতিরাম থানার মাধ্যমে সুরজিতের মৃত্যুর সংবাদ এসে পৌঁছায়।
তেলেঙ্গানা পুলিশ জানিয়েছে, এক গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় সুরজিতের দেহ উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিললেও পরিবার ও গ্রামবাসী তা মানতে নারাজ। তাঁদের অভিযোগ, সুরজিতকে খুন করা হয়েছে অথবা ব্ল্যাকমেল করে আটকে রাখা হয়েছিল। সেই সঙ্গে সুরজিতের পরিবারের দাবি, এর আগেও বহুবার ভিনরাজ্যে গিয়ে কাজ করে নিরাপদে ফিরে এসেছেন তিনি। তাই আত্মহত্যার নেপথ্যে কোনও স্পষ্ট কারণ খুঁজে পাচ্ছে না পরিবার।
এদিকে, স্বামীর মৃত্যুর খবর পেতেই আট ও দুই বছরের দুই সন্তানকে নিয়ে কার্যত দিশেহারা স্ত্রী মনা মাহাতো। ভাঙা জরাজীর্ণ ঘরেই তাঁদের বসবাস। এখনও বাংলা আবাস যোজনার ঘর পাননি। গ্রামবাসীও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, সরকারি প্রকল্পের নানা সুবিধা সম্পর্কে এখনও অজ্ঞাত তাঁরা।
ইতিমধ্যেই পতিরাম থানার পক্ষ থেকে সুরজিতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁর দেহ আনতে ইতিমধ্যেই এলাকার চারজন রওনা দিয়েছেন। তবে বারবার চেষ্টা করা হলেও বোল্লার ওই ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব ওঠেনি।