উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেষ্কঃ মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের অস্ত্রে এবার তাঁকেই ঘায়েল করতে কোমর বাঁধল কংগ্রেস এবং বিরোধী মহাজোট। বুধবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বর্ধিত বৈঠকে যোগ দিতে এসে অতিপিছড়া ন্যায় সংকল্পের কথা ঘোষণা করেন রাহুল গান্ধি। বিহারের অত্যন্ত অনগ্রসর শ্রেণির (ইবিসি) জন্য শিক্ষা ও সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ সহ মোট ১০ দফা কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। তিনি সাফ জানিয়েছেন, মহাজোটের সরকার ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেই ওই ১০ দফা কর্মসূচির রূপায়ণ করবে। বিহারের মোট জনসংখ্যার ৩৬ শতাংশ হল ইবিসি।
দীর্ঘ দুই দশক ধরে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নিজেকে ইবিসিদের অভিভাবক হিসেবে তুলে ধরেছেন। তাঁর ‘অতি পিছিয়ে পড়া’ প্রকল্প, স্কুলছাত্রীদের জন্য সাইকেল, পঞ্চায়েতে এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণ বারবার তাঁকে রাজনৈতিক ফায়দা দিয়েছে। এদিন সেই ইবিসিদের সমর্থন কংগ্রেস তথা মহাজোটের দিকে টানতে এদিন মরিয়া বার্তা দেন রাহুল গান্ধি। ইবিসি সমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিহারে নীতীশ কুমারের সরকার ২০ বছর ধরে রয়েছে। তাহলে ওই ১০ দফা কর্মসূচির একটিও কেন উনি করেননি? আমরা ইবিসি সমাজের সঙ্গে বসে এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। ইবিসিদের থেকে ভোট নিয়ে তাদের ব্যবহার করে দাবিয়ে রেখেছিলেন।’
কংগ্রেস যে ১০টি ন্যায় সংকল্পের কথা ঘোষণা করেছে সেগুলির মধ্যে ইবিসি অত্যাচার প্রতিরোধ আইন তৈরি, সংবিধানের ১৫ (৫) নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সমস্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ, পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলিতে ইবিসিদের সংরক্ষণ ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা, জনসংখ্যার অনুপাতে সংরক্ষণের ৫০ শতাংশের সীমা বৃদ্ধি, ইবিসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নট ফাউন্ড সুটেবেল ধারণাটিকে বেআইনি বলে ঘোষণা করা, ইবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত বিষয়টির সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন, ভূমিহীন ইবিসি, এসসি, এসটিদের জন্য শহুরে এলাকায় ৩ ডেসিমেল এবং গ্রামীণ এলাকায় ৫ ডেসিমেল জমি বরাদ্দ করা হবে। ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত সরকারি চুক্তিতে ৫০ শতাংশ ইবিসি সংরক্ষণের কথাও বলা হয়েছে ওই সংকল্পে।
স্বাধীনতার পর বুধবার বিহারে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বর্ধিত বৈঠক বসেছিল। ১৯৪০ সালে বিহারের রামগড়ে মৌলানা আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসেছিল। এবার অবশ্য কংগ্রেসের বৈঠকে কৃষক সমস্যা, বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধিকে প্রধান ইস্যু করে ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ বাড়ানোর কথা বলেন। ভোটের আগে এই বৈঠকে মূলত ভোট চুরি, সাংগঠনিক চ্যালেঞ্জ, আসনবণ্টনের মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে। তিনি বলেন, ‘নীতীশ কুমারকে বিজেপি মানসিকভাবে অবসরে পাঠিয়ে দিয়েছে। তিনি এখন বোঝা হয়ে উঠেছেন।’ যদিও বিজেপি নেতা রবি শংকর প্রসাদ বলেন, ‘মানুষ এখনও মনে রেখেছে আরজেডি আমলের অপরাধ, লুট আর দুর্নীতির দিনগুলো। এনডিএ ফের জিতবে।’