কল্লোল মজুমদার, মালদা: বর্ষা শুরু হতে না হতেই মালদা জেলায় ডেঙ্গির সঙ্গে চোখ রাঙাচ্ছে ম্যালেরিয়া। গত কয়েকদিনে দুই রোগের প্রকোপ অনেকটাই বাড়ল। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে জেলায় ১৬৪ জন ম্যালেরিয়া আক্রান্তের হদিস মিলেছে। সঙ্গে দুইজন চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীও রয়েছেন। শুধু তাই নয়, ম্যালেরিয়ার (Malaria) সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে অনেকটাই। স্বাস্থ্য দপ্তর জানাচ্ছে, আক্রান্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। আর সেইজন্য ভিনরাজ্য থেকে জোলায় ফিরে আসা শ্রমিকদের দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে স্বাস্থ্য দপ্তর। এ বিষয়ে মালদা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলছেন, ‘ভিনরাজ্য থেকে ফিরে আসা ৯০ শতাংশ শ্রমিকদের মধ্যে ম্যালেরিয়ার উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া মালদায় (Malda) বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় জল জমা হচ্ছে। সেই জলে স্বাভাবিকভাবেই বাসা বাঁধছে ডেঙ্গির মশা। ইতিমধ্যে জেলায় ১১১ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিস মিলেছে।’ পাশপাশি আগামী কয়েকদিনে ডেঙ্গির আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তিনি। স্বাস্থ্য দপ্তর পুরো বিষয়টির উপর নজর রাখছে।
প্রতিদিন মালদা জেলা থেকে হাজার হাজার শ্রমিক রোজগারের আশায় দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু সহ দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন শহরে চলে যান। কিন্তু গত কয়েকদিনে বিভিন্ন রাজ্য থেকে অনেক শ্রমিক জ্বর নিয়ে ফিরে আসছেন বলে জানা গিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও শ্রম দপ্তরের উদ্যোগে ফিরে আসা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ফেলসি ফেরাম ভাইরাসের হদিস মিলছে। এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্য দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কালিয়াচক-১, কালিয়াচক-২, কালিয়াচক-৩ ও ইংরেজবাজারে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা সবচাইতে বেশি। সংখ্যাটা গতবারের চেয়ে অনেকটাই বেশি। এছাড়াও গাজোলেও কয়েকজন ম্যালেরিয়া আক্রান্তের হদিস পাওয়া গিয়েছে। তাই স্বাস্থ্য দপ্তর ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গি রোধে গ্রামে গ্রামে ঘুরে সচেতনতার প্রচার চালাচ্ছে।
সাধারণ মানুষকে সচেতন করে বোঝানো হচ্ছে, জমা জলে মশার জন্ম আটকাতে বাড়ির আশপাশে কোথাও জল যাতে জমতে দেওয়া না হয়। এছাড়া বাড়িতে কারও জ্বর হলে তা ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া উপসর্গ হতে পারে। তাই জ্বর হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে রাতে ঘুমানোর সময় বাসিন্দাদের মশারি ব্যবহার করার কথাও বলা হয়েছে।
এনিয়ে কালিয়াচক-১ (Kaliachak) ব্লকের বিএমওএইচ মুস্তাফিজুর রহমান জানান, এলাকায় এখনও পর্যন্ত ২৮ জন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তাঁদের বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। বাইরে থেকে আক্রান্ত হয়েই তাঁরা বাড়ি ফিরে এসেছেন। কালিয়াচকের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে কালিয়াচক ১, সিলামপুর, আলিপুর, জালালপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।