আজাদ, মানিকচক: মালদার (Malda) মানিকচকের (Manikchak) ভূতনির উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে বন্যাত্রাণের প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অর্চনা মণ্ডল ও এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট বাসুদেব মণ্ডল মিলে বন্যার্তদের জন্য খিচুড়ি, যোগাযোগের জন্য নৌকা এবং স্যানিটাইজেশনের জন্য বরাদ্দ ওই টাকা লুট করেছেন। টাকা তছরুপে জড়িত পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মী ও কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্যও।
গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সহ ১৬ জন পঞ্চায়েত সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় দলেও হইচই শুরু হয়েছে। শুধু ব্লক ও জেলা প্রশাসনকে জানানো নয়, পঞ্চায়েত প্রধান, এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট ও ছয়টি ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন অভিযোগকারীরা।
গত বছর পরপর দু’দফার বন্যায় নাজেহাল দশা ভূতনিবাসীর। প্রায় দু’মাস জলবন্দি ছিলেন তাঁরা। বন্যার কবলে জমির ফসল, ভিটেমাটি সর্বস্ব হারিয়েছেন ভূতনিবাসী। অভিযোগ, এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে বড় অঙ্কের টাকা লুট করেছে উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। সামান্য কিছু টাকা খরচ করেই কোটি টাকার ভুয়ো বিল বানিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় ১৫তম অর্থ কমিশন, স্বচ্ছ ভারত মিশন সহ অন্যান্য প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত প্রায় দেড় কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে ভূতনি থানা, মানিকচকের বিডিও, মালদা জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান নাসির শেখ সহ তৃণমূলের ১৩ জন, কংগ্রেসের দুজন ও বিজেপির একজন সদস্য। গত মার্চ মাসে তাঁরা দ্বারস্থ হন উচ্চ আদালতের। আদালত মানিকচকের বিডিওকে তিন মাসের মধ্যে এই ঘটনার সম্পর্কিত তথ্য জমা দিতে নির্দেশ দেন।
উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের (TMC) উপপ্রধান নাসির শেখ অভিযোগ করেন, বন্যার সুযোগে কোটি টাকা ভুয়ো বিল করে লুট করেছেন প্রধান ও এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট। বন্যার সময় কত টাকা খরচ হয়েছে তা আমরা সহ এলাকাবাসী সবাই জানি। ব্লক ও জেলা প্রশাসনকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আমরা আবার উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হব। দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধান ও সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত আমরা ছেড়ে কথা বলব না।
মানিকচকের বিডিও অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘হাইকোর্টের তরফে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তদের নোটিশ করে ডেকে তাঁদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি। খুব শীঘ্রই তা আদালতে জমা দেব।’ অভিযুক্ত প্রধানকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।