অরিন্দম বাগ, মালদা: দশমের এক পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় অভিযোগের তির নাবালিকার সৎ মায়ের দিকে। বুধবার ময়নাতদন্তের পর ওই পড়ুয়ার দেহ বাড়িতে আনা হলে মেয়েকে খুনের অভিযোগে মাকে তাড়া করেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষিপ্ত জনতার হাত থেকে অভিযুক্ত মাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। বছর পনেরোর ওই পড়ুয়া মালদা (Malda) শহরেরই একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পাঠরত ছিল। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে মালদার বঁাশবাড়ি এলাকায়। এই ঘটনায় পরিবারের তরফে এখনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রীর মৃত্যুর পর ওই পড়ুয়ার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর দুটি মেয়ে রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই পড়ুয়ার সৎমা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এনিয়ে পরিবারে প্রায়ই গণ্ডগোল হত। প্রথমে ওই মহিলা নিজের প্রেমিকের সঙ্গে বড়ো মেয়ের বিয়ে দিতে চান। কিন্তু বড়ো মেয়ে তাতে রাজি হয়নি। সৎমায়ের অত্যাচার থেকে বাঁচতে হোলির আগের দিন সে পালিয়ে বিয়ে করে নেয়। এরপর মহিলার নজর গিয়ে পড়ে ছোটো মেয়ের ওপর। একইভাবে ছোটো মেয়ের সঙ্গে নিজের প্রেমিকের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই ছোটো মেয়েও সৎমায়ের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। মঙ্গলবার সন্ধেয় ছোটো মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এদিকে এলাকায় চাউর হয়ে যায়, ওই মহিলা গলা টিপে ছোট সৎমেয়েকে খুন করেছে। পড়ুয়ার দেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হলে স্থানীয় প্রমিলাবাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে ওই মহিলাকে ধাওয়া করেন। খানিক কিল ঘুসিও পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
মৃত পড়ুয়ার দিদি জানান, ‘মায়ের মৃত্যুর দু’বছরের মধ্যেই বাবা ওই মহিলাকে বিয়ে করেন। কিন্তু তারপরেও ওই মহিলা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এলাকার লোকজনও বিষয়টি জানেন। এখন ওই মহিলা নিজের প্রেমিকের সঙ্গে বোনের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু বোন তাতে রাজি হয়নি। আমি নিশ্চিত, বোনকে গলা টিপে খুন করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করব।’