হরিশ্চন্দ্রপুর: গ্রামের বয়স্কদের সঙ্গে দল বেঁধে গত সপ্তাহে মহাকুম্ভে (Maha Kumbh 2025) যাওয়ার জন্য প্রয়াগরাজের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন মালদার (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর (Harishchandrapur) ব্লকের ভালুকা বাজারের বাসিন্দা বছর ৭০-এর অপর্ণা সাহা। উদ্দেশ্য ছিল মৌনি আমাবস্যায় মঙ্গলবার গভীর রাতে গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতী নদীর সঙ্গমে অমৃতস্নান করা। সেইমতো স্থানীয় একটি ধর্মশালা থেকে রওনাও হয়েছিলেন রাতে। কিন্তু সঙ্গমের কাছে পৌঁছোনোর আগেই বিপত্তি। ভিড় বেড়ে যাওয়ায় দলছুট হয়ে হারিয়ে যান তিনি। সেইসময় দেখতে পান, তাঁর পাশেই ভিড়ের মধ্যে পদপিষ্ট হয়ে পড়েছে এক শিশু। নিজের জীবনের কথা না ভেবে মুহূর্তের মধ্যে ভিড়ের মধ্য ঝাঁপিয়ে পড়ে উদ্ধার করেন শিশুটিকে। ভিড়ের চাপে আহতও হন তিনি। শিশুটিকে বাঁচালেও নিজেই দিকভ্রষ্ট হয়ে পড়েন। এরপরই শিশুটির পরিবার অপর্নাদেবীকে তাঁদের বাড়িতে বেনারসে নিয়ে যান। সোশ্যাল মিডিয়ায় হিন্দিতে অপর্ণাদেবীর ছবি সহ প্রচার শুরু করেন তাঁরা। তাতেই অবশেষে হারিয়ে যাওয়া মায়ের খোঁজ পেলেন ছেলেরা। গতকালই মায়ের খোঁজ পেয়ে বেনারসের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন অপর্ণা দেবীর এক ছেলে। আগামীকাল তাঁদের বাড়ি ফেরার কথা।
মোবাইলে অপর্ণাদেবী জানান, শিশুটি মাটিতে পড়ে কান্নাকাটি করছিল দেখে তিনি মুহূর্ত দেরি না করে তাকে আগলে কোনওরকমে বসে থাকেন। শিশুরটির পরিবার তাঁদের উদ্ধার করে। শিশুটির মা সীমা যাদব জানান, তাঁর মেয়ে হাতছাড়া হয়ে ভিড়ের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। বৃদ্ধা মেয়েকে ভিড়ের চাপে আগলে কোনওরকমে মাটিতে পড়েছিলেন। বৃদ্ধা দলছুট হয়ে গেলে তাঁরাই তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি প্রচার করা হয়।
মাকে ফিরিয়ে আনতে বেনারস রওনা হয়েছেন বড় ছেলে পেশায় শিক্ষক পূর্ণেন্দু সাহা। ছোট ছেলে চন্দ্রশেখর সাহাও শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে মাকে ফিরে পেলাম। মহাকুম্ভের পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা জানতে পেরে আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে কুম্ভের মতো জায়গায় গিয়ে মা পদপিষ্ট হওয়ার হাত থেকে একটি শিশুর প্রাণ রক্ষা করেছে জেনে ভালো লাগছে।’