শুভদীপ শর্মা, ক্রান্তি: পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে শনিবার থেকে ক্রান্তি ব্লকের (Kranti) চাঁপাডাঙ্গা ও চ্যাংমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সোমবার সকালে বৃষ্টি কিছুটা কমায় পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক হয়। সোমবার রাতে ফের পাহাড়ে ভারী বৃষ্টির জেরে এই দুই পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বর্তমানে গোটা ব্লকের প্রায় ৬০০ জনের বেশি গ্রামবাসী জলবন্দি। গ্রামের মধ্যে থাকা চাঁপাডাঙ্গা-ক্রান্তিগামী রাজ্য সড়কের ওপর দিয়ে তিস্তার জল বইছে। যার যেরে ওই পথে যান চলাচল বন্ধ। যানবাহন ঘুরপথে যাতায়াত করছে। মঙ্গলবার ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়। ক্রান্তি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পঞ্চানন রায় বলেন, ‘গোটা ব্লকে প্রায় ৬০০ জনের বেশি বাসিন্দা জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাড়িঘর ছেড়ে বেশিরভাগ গ্রামবাসী পাশের তিস্তার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে বন্যা দুর্গতদের কথা মাথায় রেখে এদিন শুকনো খাবার, জামাকাপড় ও চাল দেওয়া হয়েছে।’
স্থানীয় সূত্রে খবর, চলতি বছর এই নিয়ে দুই গ্রাম পঞ্চায়েতে আটবার তিস্তার জল প্রবেশ করেছে। ব্লকের চ্যাংমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের জলবন্দি সাহেববাড়ি ও দোলাইগাঁও গ্রামে কয়েক বছর আগেও তিস্তার জল প্রবেশ করত না। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে সিকিমে ভয়াবহ বৃষ্টির জেরে পলি পড়ে তিস্তায় নাব্যতা কমে যায়। তারপর থেকে এই দুই গ্রামের প্রায় ৮০টি পরিবার তিস্তার জল বাড়লেই জলবন্দি হয়ে পড়ে। স্থানীয় গ্রামবাসী মহম্মদ মনসুর উদ্দিনের কথায়, ‘শুধু যে বাড়িঘর জলের তলে চলে যাচ্ছে তা নয়। এলাকার কৃষিজমি, ফসল ব্যাপকহারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মাসের পর মাস পরিবার নিয়ে বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়ে থাকতে হচ্ছে।’ একই বক্তব্য আরেক বাসিন্দা শাহাজাহান আলির। এলাকার বাসিন্দারা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে তিস্তায় জল বাড়তে শুরু করায় এদিন তিস্তা ব্যারেজ থেকে ২৬০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়। ক্রান্তি ব্লকের চ্যাংমারির পাশাপাশি চাঁপাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাস্টারপাড়া, রায়পাড়া ও কেরানিপাড়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় চলে যায়।
প্রশাসন সূত্রে খবর, চাঁপাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নন্দিতা রায় মল্লিক পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন।