সেনাউল হক, কালিয়াচক: কালিয়াচক, নামটা শুনলেই একসময়ে চমকে উঠতেন অনেকে। জাল নোট আর মাদকের কারবার থেকে শুরু করে গুলি, বোমার লড়াইয়ে প্রায়ই সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে মালদার এই অঞ্চল। সেই কালিয়াচকের (Kaliachak) মেয়েরাই এখন শিক্ষার আলোয় উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে উঠছেন। সর্বভারতীয় পরীক্ষা নিটে (NEET) তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কালিয়াচকের ছেলেমেয়েরা। এবার কালিয়াচকের তিনটি ব্লক মিলিয়ে ৫০ জনেরও বেশি ছাত্রছাত্রী নিটে সফল হয়েছেন। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও শুভেচ্ছার ঝড় বইছে।
সব থেকে ভালো র্যাংক করেছেন ফারিয়া হোসেন। তাঁর র্যাংক ৭৫৪৯। ফারিয়া হোসেন মাধ্যমিক বোর্ডের ৭৯৬ নম্বর পেয়ে ২০২১ সালে রাজ্যে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। উচ্চমাধ্যমিকেও ৪৩৭ নম্বর পেয়ে নজর কেড়েছিলেন। তবে গতবছর নিটে সফল হতে পারেননি। যদিও হাল না ছেড়ে দ্বিতীয়বার নিটে বসেন। এবার সফল হয়ে কালিয়াচকের নাম উজ্জ্বল করেছেন। কার্ডিওলজিস্ট হওয়ার ইচ্ছে আছে ফারিয়ার। ফারিয়া হোসেনের কথায়, ‘এই ফলাফলে আমরা সকলেই খুশি। আমি কলকাতার কোনও মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসক হতে চাই। কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে এলাকার মানুষের সেবা করতে চাই।’
ফারিয়ার বাবা আনোয়ার হোসেন কালিয়াচক নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মা সায়িদা খাতুন গৃহবধূ। তাঁদের বাড়ি কালিয়াচক শহর সংলগ্ন কাঁঠালবাড়ি গ্রামে। তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড়দিদি মেরিনা হোসেন মালদা মেডিকেল কলেজে ইন্টার্নশিপ করছেন। ছোট ভাই তাসলিম হোসেন নবম শ্রেণিতে পড়ছে। এছাড়া মোথাবাড়ি সাটাংগাপাড়ার মেয়ে আমিনা খাতুনের র্যাংক ১৭৮৭৫। কালিয়াচকেরই নইমা খাতুনের র্যাংক ৩৮২৭৫।
মেয়ের সাফল্যে খুশি বাবা আনোয়ার হোসেন। তাঁর কথায়,‘শনিবার অপেক্ষার প্রহর গুনছিলাম। ঘনঘন হ্যাঙ্গ করছিল সাইটটা। যখন খুলল, দেখলাম আমার মেয়ে ভালো র্যাংক করেছে। আমরা সকলেই খুশি। চাই মেয়ে এগিয়ে যাক।’
নিটের সাফল্য নিয়ে কালিয়াচক কলেজের অধ্যক্ষ নাজিবর রহমান বলেন, ‘কালিয়াচকের ছাত্রছাত্রীরা যে ভালো পড়াশোনা করে, এই ফলই তার প্রমাণ। তাদের মেধা রয়েছে। নিট সহ বিভিন্ন সর্বভারতীয় পরীক্ষাতেই বারবার এর প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা চাই, কালিয়াচককে মানুষ জানুক ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারের জায়গা হিসেবে। হবু চিকিৎসকদের উন্নতি কামনা করছি।’