অনুপ সাহা ও তমালিকা দে, ওদলাবাড়ি ও শিলিগুড়ি: আকাশে পাখির মতো উড়ে বেড়ানোর রোমাঞ্চ অনুভব করতে চান? তাহলে পুজোর মুখে আপনার জন্য জোড়া সুখবর। মেঘমুলুকে ভাসতে ভাসতে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। ডেলোতে আবার চালু হচ্ছে প্যারাগ্লাইডিং (Paragliding)। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) জানিয়েছে, সোমবার থেকে খুলে যাচ্ছে ডেলোর এই অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের আসর (Journey Sports activities)। তবে বৃষ্টির মরশুমে পর্যটকদের সুরক্ষার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হবে। জিটিএ পর্যটন বিভাগের ফিল্ড ডিরেক্টর দাওয়া গ্যালপো শেরপা বলেন, ‘অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের প্রতি পর্যটকদের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য পুজোর আগে চালু করা হল পরিষেবা। বৃষ্টির মরশুমের জন্য কয়েকমাস এই অ্যাডভেঞ্চার বন্ধ রাখা হয়েছিল।’
ডেলো প্যারাগ্লাইডিং অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত বিপিন গোলে বলেন, ‘মাথাপিছু ৩,৫০০ টাকা দিয়ে প্যারাগ্লাইড করা যাবে। এজন্য দক্ষ পাইলট রয়েছেন। সমস্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা দেখেই সোমবার থেকে পুনরায় তা চালু করার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।’
অন্যদিকে, দ্রুত প্যারাগ্লাইডিং পরিষেবা চালু হতে চলেছে লুপ পুলের অদূরে। এখনও পর্যন্ত প্রস্তুতি যেভাবে এগোচ্ছে তাতে পুজোর পর, পর্যটনের ভরা মরশুমে কালিম্পং জেলার চুইখিম পাহাড়ে শুরু হবে এই অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস। ইতিমধ্যে দু’দিন ধরে ট্রায়াল রান সাফল্যের সঙ্গে শেষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চুইখিম ভিলেজ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি হোম খাওয়াস। ডেলোর প্রশিক্ষিত পাইলট রূপক শর্মা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ইনস্ট্রাক্টরদের তত্ত্বাবধানে এই ট্রায়াল রান চলছে। সফল প্যারাগ্লাইডিংয়ের প্রাথমিক শর্ত, বাতাসের গতিবেগ, মেঘ ও হাওয়ার দিক নির্ণয় করতে পারা। বাতাস বিপরীতমুখী হলে সাধারণত ফ্লাই করা যায় না।
হোম বলেন, ‘রোমাঞ্চকর এই স্পোর্টস চালু করার আগে প্রশাসনিক স্তরে যে কাজগুলো করা বাধ্যতামূলক আপাতত তা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। আশা করছি, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পর্যটকদের জন্য চুইখিমে প্যারাগ্লাইডিং শুরু করে দেওয়া যাবে।’
লুপ পুল পেরিয়ে আরও কিছুটা এগোতেই কালিম্পং পাহাড়ের শান্ত নিরিবিলি পাহাড়ি গ্রাম চুইখিম। কৃষিকাজের পাশাপাশি গত দু’দশকে পর্যটনশিল্পকে আঁকড়ে ধরে একটু একটু করে এগোতে শুরু করেছে চুইখিম। ইদানীং ৭১৭এ জাতীয় সড়কের দৌলতে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা মসৃণ হয়েছে। বাড়ছে হোমস্টের সংখ্যাও। নির্জন পাহাড়চূড়ায় বসে রংবেরঙের পাখির আনাগোনা, নির্মল বাতাস ও পাহাড়ি পথে হেঁটে বেড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয় খাবারের স্বাদ পেতে অনেকে আজকাল চুইখিম আসছেন। পবিত্রা খাওয়াস নামে এক হোমস্টের মালকিন বলেন, ‘আশা করছি, প্যারাগ্লাইডিংয়ের মতো অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের টানে আগামীদিনে পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়বে চুইখিমে।’
দার্জিলিংয়ের জলাপাহাড়, কালিম্পংয়ের ডেলোর পর প্যারাগ্লাইডিংয়ের তৃতীয় স্পট হিসেবে আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় থাকা চুইখিমে নতুন এই উদ্যোগকে কেন্দ্র করে যুব সম্প্রদায়ের উৎসাহ তুঙ্গে।