উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (JNU) দুর্গাপুজোর বিসর্জন শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এবিভিপি এবং বাম-সংযুক্ত ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সবরমতি টি-পয়েন্টের কাছে এই সংঘর্ষ শুরু হয়, যেখানে দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে ধর্মকে রাজনীতিকরণ এবং ঐতিহ্য ভাঙার অভিযোগ তোলে।
এবিভিপি-র প্রকাশিত বিবৃতি অনুসারে, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দুর্গাপূজার বিসর্জন শোভাযাত্রাটি যখন সবরমতি টি-পয়েন্টের কাছে পৌঁছায়, তখন অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস’ অ্যাসোসিয়েশন (AISA), স্টুডেন্টস’ ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (SFI) এবং ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্টস’ ফেডারেশন (DSF)-এর সদস্যরা তাতে বাধা দেন।
এবিভিপি-র জেএনইউ (JNU) সভাপতি মায়ঙ্ক পাঞ্চাল এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উপর আক্রমণ নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎসব ঐতিহ্য এবং শিক্ষার্থীদের বিশ্বাসের উপর সরাসরি আঘাত। এবিভিপি কোনও মূল্যেই এই ধরনের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন সহ্য করবে না।”
অপরদিকে, বাম ছাত্র সংগঠনগুলি এবিভিপি-র সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ধর্মীয় অনুভূতিকে রাজনৈতিক প্রচারের জন্য ব্যবহারের পালটা অভিযোগ করেছে। এআইএসএ (AISA) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিসর্জন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এবিভিপি একটি ‘রাবণ দহন’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল, যেখানে প্রাক্তন ছাত্র উমর খালিদ এবং শারজিল ইমামের কুশপুত্তলিকা রাবণ হিসাবে পোড়ানো হয়। উল্লেখ্য, খালিদ এবং ইমাম দু’জনেই বর্তমানে সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভ ও ২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গার ষড়যন্ত্র মামলায় বিচারাধীন।
এআইএসএ (AISA) এই কাজকে “স্পষ্ট ও জঘন্য ইসলামোফোবিয়ার প্রদর্শন” এবং রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছে, কেন এবিভিপি রাবণের প্রতীক হিসেবে নাথুরাম গডসে বা গুরমিত রাম রহিম সিং-এর মতো ব্যক্তিত্বকে বেছে নেয়নি? বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “জেএনইউ ঘৃণা ও ইসলামোফোবিয়ার রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে।” এর পাশাপাশি ছাত্র সমাজকে “আরএসএস-এবিভিপি-র বিভাজনমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর” আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই সংঘর্ষের বিষয়ে জেএনইউ-এর প্রেস রিলেশনস অফিসার এবং চিফ সিকিউরিটি অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তারা দু’জনেই জানান যে, এই বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনও তথ্য নেই। ক্যাম্পাসে উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানা গেছে।