জয়গাঁ: দিন তিনেক আগে আহত অবস্থায় গোপালবাহাদুর বস্তিতে দেখা মিলেছিল একটি মাকনার। তারপর হাতিটিকে আর দেখা যাচ্ছিল না এলাকায়। হাতিটি কোথায় গেল? এই প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানে জঙ্গলে টহল বাড়িয়ে দেন হ্যামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জের অন্তর্গত বিটগুলির বনকর্মীরা। অবশেষে রবিবার সকালে হাতিটির সন্ধান মিলল। জয়গাঁ সংলগ্ন বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের জঙ্গলে দেখা মিলল সেই মাকনার। অসুস্থ হয়ে পড়েছিল হাতিটি। চলাফেরার শক্তি হারিয়েছিল। গভীর জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল। হ্যামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জ অফিসের বনকর্মীদের তত্ত্বাবধানে মুমতাজ ও জোনাকি নামের দুই কুনকিকে নিয়ে যাওয়া হয় গভীর জঙ্গলে।
গত বৃহস্পতিবার দিনের আলোয় কালচিনি ব্লকের দলসিংপাড়া গোপালবাহাদুর বস্তিতে আহত অবস্থায় গ্রামে দাপিয়ে বেড়িয়েছিল সেই মাকনাই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বনকর্মীরা যাওয়ার আগেই এলাকা ছাড়ে হাতিটি। তবে বাসিন্দাদের থেকে পাওয়া ভিডিও ও তথ্য মারফত হাতিটির আহত হওয়ার ঘটনা জানতে পারে বন দপ্তর। এরপর হাতিটিকে উদ্ধার করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে জঙ্গলে শুরু হয় তল্লাশি।
রবিবার সীমান্ত শহর জয়গাঁর খোকলাবস্তি সংলগ্ন বক্সার ব্যাঘ্র-প্রকল্পের গভীর জঙ্গলে খোঁজ মেলে হাতিটির। তার চিকিৎসা শুরু করতে নিয়ে আসা হয় মুমতাজ ও জোনাকিকে। এই দুটো কুনকিকে হ্যামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জ থেকে জঙ্গলপথে নিয়ে যাওয়া হয় সেই আহত হাতির কাছে। এরপর ওই দুই কুনকি হাতির সাহায্যে ‘ট্রাঙ্কুলাইজ’ করে শুরু হয় হাতিটির চিকিৎসা। আহত মাকনার পায়ে ও পিঠের কাছে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে বন দপ্তর সূত্রে খবর। অনুমান, একাধিক হাতির সঙ্গে লড়াইয়ের ফলেই এই হাতিটি জখম হয়েছিল। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু না হলে হাতিটির প্রাণসংশয় হত বলে বন দপ্তর সূত্রে খবর।
এদিন সকালে হাতিটিকে জঙ্গলে শুয়ে থাকতে দেখেছিলেন টহলরত বনকর্মীরা। হাতিটির অবস্থান জানার পরই মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। দুজন পশু চিকিৎসক, চারজন সহযোগী, বনকর্মী এবং ডিএফডি হরিকৃষ্ণন পিজে আহত হাতিটির কাছে পৌঁছে যান। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও ফিরে আসেননি মেডিকেল টিম, বনকর্মী এবং আধিকারিক। কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা আগে থেকেই করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে হাতিটির জ্ঞান ফিরলে তাকে জঙ্গলে রাখা হবে নাকি প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্রে আনা হবে তা নিয়ে এদিন কিছু বলেননি বন দপ্তরের কোনও আধিকারিক। হাতিটির বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য ডিএফডিকে বারবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন না ধরায় এবিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।