হরিশ্চন্দ্রপুর: পেটের দায়ে দিনমজুরি করতে হয় গান্ধিবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামি তথা অবিভক্ত বাংলার আইন পরিষদে মালদা জেলা থেকে প্রথম আদিবাসী বিধায়ক বীর বিরসা ওরাওঁয়ের বর্তমান প্রজন্মকে। এই খবর উত্তরবঙ্গ সংবাদে প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। রবিবার বিরসা ওরাওঁয়ের বাড়িতে যান হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার। আইসির সামনেই ক্ষোভ উগরে দেন বিরসা ওরাওঁয়ের পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, ওই স্বাধীনতা সংগ্রামির পরিবারকে সরকারি জমি পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই জমি পর্যন্ত দখল করে নিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত জমি মাফিয়ারা। বিরসা ওরাওঁয়ের নাত বউ সুমিয়া ওরাওঁ জানান, তাঁর দাদাশ্বশুর স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু তিনি মাত্র মাসে ১ হাজার টাকা ভাতা পান। দিনমজুরি না করলে পেট চালানোই দায়। এতদিন পর্যন্ত বিধায়ক থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এমনকি পঞ্চায়েত স্তরের কোনও জনপ্রতিনিধি এই পরিবারের জন্য কিছু করেননি বলে অভিযোগ তাঁর।
এদিন আইসি ওই পরিবারকে ব্যক্তিগতভাবে কিছু অর্থ সাহায্য করেন। স্থানীয় বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য হেমা ওরাওঁয়ের স্বামী হরতাল ওরাওঁ বলেন, ‘ব্যাপারটা খুব দুঃখজনক, ওনাদের পরিবার সরকারি জমি পেয়েছিলেন কিন্তু সেটাও শাসকদল আশ্রিত স্থানীয় মাফিয়ারা দখল করে নিয়েছে।। আমরা আজ পুলিশকে সেটা জানালাম।’ হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, ‘সত্যিই ব্যাপারটা দুঃখজনক যে একজন স্বাধীনতার সংগ্রামীর পরিবার কষ্ট ও অবহেলায় দিন কাটাচ্ছেন। তাছাড়া জমি দখলের যে ব্যাপারটি আমরা জানতে পারছি সেটা নিয়ে আমরা অবশ্যই পদক্ষেপ নেব। দলের যদি কেউ এই ঘটনায় জড়িয়ে থাকে তাকেও কোনরকম ছাড় দেওয়া হবে না, আইন আইনের মতোই ব্যবস্থা নেবে।’
আইসি মনোজিৎ সরকার বলেন, ‘আমি উত্তরবঙ্গ সংবাদে খবরটি জানার পরেই জেলা প্রশাসনের নির্দেশে নিজে এসে তদন্ত করলাম। আমি চেষ্টা করব ওনাদের সমস্যা সমাধান করার।’ হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের বিডিও সৌমেন মণ্ডল বলেন, ‘আমি ঘটনার কথা জানতে পেরেই ঘটনার খোঁজ নিতে পাঠিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে ওই দপ্তর থেকে পরিবারটিকে সাহায্য করা হবে।’