প্রসেনজিৎ সাহা, দিনহাটা: হোটেলে খেতে গিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় স্যালাডে দ্বিতীয়বার লংকা চেয়েছিলেন ধনেশ রায়। কিন্তু হোটেলকর্মী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, লংকার দাম বেড়ে গিয়েছে, তাই দ্বিতীয়বার আর লংকা দেওয়া যাবে না। হঠাৎই লংকার দাম বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্তের পকেটে টান পড়ার জো হয়েছে। মঙ্গলবার চওড়াহাট বাজারে কেজিপ্রতি লংকা ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে (Dinhata)। আর এদিন বাজারে আসা ক্রেতারা তাই লংকার ঝালের চেয়ে দামের ঝালে বেশি কাবু হয়ে পড়েন।
প্রতিবছরই বর্ষাকাল এলেই কাঁচা লংকার দাম বেড়ে যায়। কিন্তু এবছর সেভাবে বৃষ্টি না হলেও লংকার দাম বাড়ায় চিন্তায় সাধারণ মানুষ। বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সমীর সাহার কথায়, ‘এদিন কৃষিমেলা পাইকারি বাজারে এক কেজি কাঁচা লংকা ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরো বাজারে সেই দাম হয়ে যায় ১৬০ টাকা।’ হঠাৎ করে এত দাম বাড়ার কারণ কী? বললেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে কাঁচা লংকার আমদানি অনেকটাই কম হয়েছে। সেকারণে দাম বাড়তে পারে।’ আরেক সবজি ব্যবসায়ী তাপস দাস জানালেন, অন্যান্য জেলায় বৃষ্টির কারণে ফলন মার খাওয়ায় আমদানি কম হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে পাইকারি বাজারে বেশি দাম দিয়ে লংকা কিনতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে খোলা বাজারে এই দাম না রাখলে লাভই থাকবে না।
আলুর মতোই বাঙালির হেঁশেলে একটি অন্যতম সবজি হল লংকা। যা ছাড়া কোনও রান্নাই চলে না। সেই লংকার দাম ডাবল সেঞ্চুরি হওয়ায় মাথায় হাত অনেকেরই। মঙ্গলবার প্রত্যুষা বাজারে সবজি কিনছিলেন সোনালি চৌধুরী। লংকার আকাশছোঁয়া দাম শুনতেই চিন্তায় পড়ে গেলেন। এই তো দিনসাতেক আগেই ৮০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন। তারপর একদিন একশো, এখন তো এক কেজির দাম একেবারে দুশোর ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। ফলে পকেটে একটু তো টান পড়ছেই। সোনালির কথায়, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অন্যান্য সবজির দাম অনেকটাই কম রয়েছে। কিন্তু লংকার দাম মাঝখান দিয়ে এতটা বেড়ে যাবে, বুঝতে পারিনি। সবজি বাজারের বাজেট যেন ঘেঁটে ঘ হয়ে গিয়েছে।’
আরেক বাসিন্দা সৌরভ দাস এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের আর্জি জানােলন। তাঁর বক্তব্য, ‘বাজারগুলিতে একটু নজরদারি চালানো উচিত প্রশাসনের। এতে তাঁরা পাইকারি এবং খুচরো বাজারে সবজির দামের তফাতটা বুঝতে পারবেন।’