Dalkhola snake chunk | অ্যান্টিভেনম নয়, সাপে ছোবল দেওয়া রোগীকে দেওয়া হল টিটেনাস, মৃত্যু তরুণের

Dalkhola snake chunk | অ্যান্টিভেনম নয়, সাপে ছোবল দেওয়া রোগীকে দেওয়া হল টিটেনাস, মৃত্যু তরুণের

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


শুভ্রজ্যোতি রাহা, ডালখোলা: জরুরি বিভাগের বেডে বসে স্বয়ং রোগী বারবার অনুরোধ করে গেলেন, ‘আমাকে সাপে ছোবল মেরেছে। এন্টিভেনম দিন…এন্টিভেনম।’ কিন্তু চিকিৎসক তাঁকে টিটেনাস ইনজেকশন দিয়ে বেডে শুইয়ে রাখলেন টানা ৪৫ মিনিট। তারপর রেফার। তারপর মৃত্যু। চিকিৎসায় গাফিলতির এমনই অভিযোগ ঘিরে শনিবার তীব্র উত্তেজনা ছড়াল ডালখোলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। মৃতের নাম রাজকুমার যাদব (২৬)। তাঁর বাড়ি বিহারের কাটিহার জেলার বলরামপুর থানার অন্তর্গত ডালখোলা সংলগ্ন শ্রীরামপুর গ্রামে। মৃতের পরিবারের লোকজন এদিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির হয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, চিকিৎসকের গাফিলতির কারণেই অকালে প্রাণ হারাতে হয়েছে তরতাজা রাজকুমারকে।

অভিযুক্ত চিকিৎসক অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ। আর করণদিঘির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সামিম আখতারের দাবি, ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি কিছুই জানেন না।

মৃত রাজকুমারের দাদা সোগেনলাল যাদব জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর ভাই বাড়ির পাশেই নিজের মুদিখানার দোকানের দরজা খুলতে গেলে তাঁর পায়ে একটি বিষধর সাপ ছোবল দেয়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিকটতম ডালখোলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসেন পরিজনরা। সোগেনলাল কর্তব্যরত চিকিৎসক অমলকান্তি বিশ্বাসকে জানান, ভাইকে সাপে ছোবল দিয়েছে। এমনকি অসুস্থ অবস্থায় রাজকুমার নিজেও বারবার চিকিৎসককে অ্যান্টিভেনম দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। সোগেনলাল বলেন, ‘চিকিৎসক আমাদের কথা শোনেননি। স্রেফ টিটেনাস ইনজেকশন দিয়ে প্রায় ৪৫ মিনিট বেডে শুইয়ে রাখেন। ধীরে ধীরে ভাইয়ের অবস্থা খারাপ হতে দেখে আমরা কিশনগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু সেখানে পৌঁছাতেই চিকিৎসকরা ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন।’

কিশনগঞ্জ থেকে মৃত রাজকুমারের দেহ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সেদিনই সৎকার করেন পরিজনরা। এরপর এদিন মৃতের পরিজন ও প্রতিবেশীরা ডালখোলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির হয়ে বিক্ষোভ দেখান। মৃতের দাদা সোগেনলালের দাবি, সময়মতো অ্যান্টিভেনম দেওয়া হলে হয়তো ভাইকে হারাতে হত না। তার মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকের গাফিলতিই দায়ী। তিনি বলেন, ‘আজ আমরা যখন চিকিৎসকের কাছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করি, তিনি নিজের ভুল স্বীকার করেছেন। কিন্তু ভুল স্বীকার করলেও এই অপরাধ মাফ করা যায় না। আমরা চাই, ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে এভাবে আর কারও প্রাণ না যায়।’

মৃত রাজকুমারের এক আত্মীয় সুশীলকুমার যাদব জানান, এদিনই রায়গঞ্জ থেকে পশুপ্রেমী সংস্থার কয়েকজন গিয়ে রাজকুমারের দোকান থেকে সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে এসেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, সাপটি স্পেক্টিক্যাল কোবরা প্রজাতির।

অভিযুক্ত চিকিৎসক অমলকান্তি বিশ্বাস অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর সাফাই, অনেক রোগী আসেন যাঁরা দাবি করেন, সাপে ছোবল দিয়েছে। কিন্তু পরীক্ষায় তা মেলে না। উপসর্গ দেখেই অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়। চিকিৎসক বলেন, ‘ওই তরুণকে টিটেনাস দেওয়ার পাশাপাশি রক্ত পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করেছিলাম। যা করতে ২০ মিনিট সময় লাগে। কিন্তু এর মধ্যেই পরিবারের লোকজন তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যেতে চান। তাঁদের অনুরোধে আমি রেফার করে দিই। এই ঘটনায় আমার কোনও গাফিলতি নেই।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ অবশ্য এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, মৃত্যুমুখে থাকা রোগী নিজে অ্যান্টিভেনম চাইলেও চিকিৎসকের তা না দেওয়াটা অমানবিক।

এ বিষয়ে করণদিঘির বিএমওএইচ সামিম আখতার বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *