সাজাহান আলি, পতিরাম: কৃষিনির্ভর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার (Dakshin Dinajpur) অর্থকরী ফল লিচু (Litchi)। কুমারগঞ্জ ব্লকের সমজিয়া, ফকিরগঞ্জ, নবগ্রাম, মোল্লাদিঘি, রসুলপুরের পাশাপাশি পতিরামের লক্ষ্মীপুর, পাগলিগঞ্জ, নাজিরপুরে উন্নত ও মিষ্টি লিচু চাষের জন্য সকলের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত। কুমারগঞ্জ ও পতিরামের লিচু গাছে প্রচুর পরিমাণে মুকুল ধরেছে এবং গুটি তৈরি হয়েছে। চাষিদের আশা, এবছর লিচুর রেকর্ড ফলন হতে পারে। সেআশায় রয়েছেন ফকিরগঞ্জের লিচুচাষি বিশ্বনাথ শীল, মোজাহার মোল্লা, মনোরঞ্জন রায়, মতিউর রহমানেরা। শিলাবৃষ্টি বা ঝড় না হলে তাদের আশাপূরণের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে।
লিচুর ভালো ফলন হবে বলে আশাবাদী দক্ষিণ দিনাজপুর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের কৃষি বিজ্ঞানী তথা বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞ (উদ্যানবিদ্যা) ডঃ সিদ্দিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘লিচু গাছের গোড়ায় নিয়মিত জল দিতে হবে। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে, জল যেন জমে না থাকে। এছাড়া মোট দুইবার গাছ ভিজিয়ে অনুখাদ্য স্প্রে করতে হবে। এক্ষেত্রে বোরন বা জিঙ্ক অথবা মলিবডেনাম অনুখাদ্য মোট দুইবার ১০ দিন অন্তর গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে।’ সিদ্দিকুল আরও জানিয়েছেন, ‘ফল নষ্ট করা পোকা (ফ্রুট বোরার) আক্রমণ হলে প্রতি লিটার জলে ২ থেকে ৩ মিলিলিটার নিমতেল মিশিয়ে বিকেলের দিকে স্প্রে করা দরকার। লিচু গাছে পোকার আক্রমণের আগে বা পরে প্রতি লিটার জলে ১.৫ মিলিলিটার পরিমাণ সাইপারমেথ্রিন মিশিয়ে দশদিন অন্তর মোট দুইবার খুব ভালো করে স্প্রে করা দরকার।’ কেন্দ্রের প্রধান ডঃ শিবানন্দ সিংহ বলেন, ‘জেলার লিচুচাষিরা কোনও সমস্যার মুখোমুখি হলে যে কোনও কাজের দিন সরাসরি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’ ব্লক কৃষিকর্তা সঞ্জয় হালদার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘অনুখাদ্য ও কীটনাশকের প্রয়োজনে দপ্তরে যোগাযোগ করলে দপ্তরের তরফে চাষিদের বিনামূল্যে এগুলি সরবরাহ করা হবে।’