রূপক সরকার, বালুরঘাট: মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বটে, কিন্তু বর্ষা শুরু না হতেই যেভাবে দক্ষিণ দিনাজপুর (Dakshin Dinajpur) জেলায় ডেঙ্গির (Dengue) প্রকোপ বাড়ছে, তাতে আতঙ্কিত হয়ে উঠছেন জেলাবাসী। স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট, সোমবার বিকেল পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ৪১ জন। বর্তমানে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে (Balurghat District Hospital) চিকিৎসাধীন দুজন। ভয় বাড়াচ্ছে অজানা জ্বরও। তবে বর্তমান সময়ে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গি। কেননা, বিভিন্ন জেলায় আক্রান্তদের শরীরে মিলেছে ডেন টু ভেরিয়ান্ট। এই ভেরিয়ান্টেই মৃত্যুর আশঙ্কা সব থেকে বেশি। তবে আতঙ্ক নয়, জেলাবাসীকে সতর্ক ও সজাগ থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।
ক’দিন ধরেই চলছে প্রাক বর্ষার বৃষ্টি। আর তাতেই প্রত্যেকদিন ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গির প্রকোপ সাধারণত দেখা যায় শহরাঞ্চলে। কিন্তু বর্তমান সময়ে গ্রামীণ এলাকাতেও মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্তের হদিস মিলছে। এখন পর্যন্ত বালুরঘাটে ১৬, হিলিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ জন। বাকিরা বিভিন্ন ব্লকের। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, গত বছর জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় হাজার। বালুরঘাট, কুমারগঞ্জ, তপন ও হিলি ব্লকের কিছু এলাকাকে হটস্পট চিহ্নিত করা হয়েছিল। এবছরও কিছু এলাকাকে চিহ্নিত করে পদক্ষেপ করা শুরু করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। মূলত, সচেতনতামূলক প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে আশাকর্মী, নার্সদের প্রশিক্ষণ। জুন মাসের মধ্যে সমস্ত প্রশিক্ষণ শেষ করার কথা। জেলার বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এই হাসপাতাল দুটিতে সিসিইউ বিভাগে দুটি করে বেড সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। এছাড়াও গ্রামীণ হাসপাতাল ও বেশির ভাগ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ডেঙ্গি রুখতে সচেতনতার পাশাপাশি রক্ত পরীক্ষার উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।
বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল সুপার ডাঃ কৃষ্ণেন্দুবিকাশ বাগ বলেন, ‘রক্ত পরীক্ষা, বেড সংরক্ষিত রাখার পাশাপাশি হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারেও জোর দেওয়া হয়েছে। জঙ্গল সাফ করার পাশাপাশি জমা জল পাম্পের সাহায্যে বের করে দেওয়া হচ্ছে।’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুদীপ দাস বলেন, ‘গত দুই বছর জেলায় প্রায় ১,৪০০-১,৫০০ মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে কোনও মৃত্যু হয়নি। এবছর এখনও পর্যন্ত জেলায় ৪১ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। এবার বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গির ডেন টু ভেরিয়ান্ট দেখা দিয়েছে। যেটা মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়ায়। আমরা আতঙ্কিত নয়, সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার কথা বলছি।’