গাজোল:“আমি বিডিও অফিস থেকে যুগ্ম বিডিও বলছি। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে দুটি করে কর্মী নিয়োগ করা হবে। একটি কম্পিউটার বিষয়ক এবং একটি কৃষি বিষয়ক। পঞ্চায়েত অফিস থেকেই এদের নিয়োগ করা হবে। আপনি যদি আগ্রহী হন তাহলে আপনার সঙ্গে আলাদা করে বসে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব”। এইভাবে ফোন করা হয় গাজোল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রদ্যুৎ সরদার এবং গাজোল-২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অর্মিলা রাজবংশীকে। এই ধরনের ফোন পেয়ে প্রথমে কিছুটা হকচকিয়ে গেলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝতে পারেন কোনও প্রতারক ফোন করছে তাদের। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে এদিন দুজনেই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন গাজোল থানায়। দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধানের কাছ থেকে এই ধরনের গুরুতর অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গাজোল থানার পুলিশ।
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে গাজোল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রদ্যুৎ সরদার বলেন, ‘গতকাল আমার কাছে হঠাৎ একটি ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে জয়েন্ট বিডিওর নাম করে বলে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে নাকি দুটি করে কর্মী নিয়োগ হবে। গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমেই এই কর্মী নিয়োগ হবে। এই নিয়োগ করলে আমিও লাভবান হতে পারি। দরকার হলে তিনি আমার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। প্রথমে এই ফোন পেয়ে হকচকিয়ে যাই আমি। পরক্ষণেই বুঝতে পারি এটি গাজোল ব্লকে যে দুজন যুগ্ম বিডিও রয়েছে তাদের কারোরই নয়। কারণ দুজনের ফোন নম্বর আমার কাছে রয়েছে এবং তাদের গলা আমি বেশ ভালোভাবেই চিনতে পারি। তবুও তাদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলি। এরকম কোনও ফোন তারা আমাদের করেননি বলে জানান। এরপরই আজকে আমরা গাজোল থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছি। আমাদের মনে হয় কোন বিরোধী অথবা দুষ্টচক্র এই কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। আইসির কাছে আবেদন করেছি অবিলম্বে এই দুষ্ট চক্রকে চিহ্নিত করে তাদের গ্রেপ্তার করা হোক।’
বিজেপির মণ্ডল সভাপতি তথা গাজোল-২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অর্মিলা রাজবংশীর স্বামী নীহার মণ্ডল জানান, তার স্ত্রীর কাছেও এই ধরনের ফোন এসেছিল। দুইজন ফোন করেছিল। একজন বলেছিলেন যুগ্ম বিডিও এবং অপরজন বলেছিলেন গাজোল থানার অফিসার। যদিও এদিন আইসি বলেছেন ওই নম্বরটি তাদের কোনও অফিসারের নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি বেছে বেছে বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত এর কাছেই এই ফোন এসেছে। আমরা এই দুষ্ট চক্রকে গ্রেপ্তার করার আবেদন জানিয়েছি।’
এই খবরে বিস্মিত যুগ্ম বিডিও সুব্রত শ্যামল। তিনি বলেন, ‘প্রধান এবং উপপ্রধানের কাছ থেকে এই ধরনের কথা শুনে সত্যিই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এর আগে আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে। এবার প্রধান এবং উপপ্রধানকে ফোন করা হচ্ছে। আশা করি পুলিশ প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
পুলিশের জানিয়েছে, প্রধান এবং উপপ্রধানের পক্ষ থেকে এই ধরনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। এই দুষ্ট চক্রকে চিহ্নিত করে তাদের গ্রেপ্তার করার সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।