কোচবিহার: কোচবিহার শহরকে হেরিটেজ করার লক্ষ্যে কয়েকবছর আগে শহরের একটা বড় অংশ বিদ্যুতের তারমুক্ত করা হয়েছিল। তবে এখনও শহরের একাধিক জায়গায় ঝুলে রয়েছে তার। সেই তার মূলত কেবল ও ব্রডব্যান্ডের। কোনও কোনও রাস্তায় ওই তার বিপজ্জনকভাবে ছিঁড়ে ঝুলছে। এতে একদিকে যেমন দৃশ্য দূষণ হচ্ছে, তেমনি ছেঁড়া তারে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বাড়ছে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে একেবারেই উদাসীন পুরসভা ও প্রশাসন। এতে কোচবিহারকে হেরিটেজ শহরের স্বীকৃতি দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ফলে বাসিন্দাদের ক্ষোভ বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে কোচবিহার শহরের বাসিন্দা দেবব্রত বণিক বলেন, ‘একটা হেরিটেজ শহরজুড়ে এভাবে এলোমেলোভাবে বিভিন্ন তার ঝুলে থাকা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসনের অবশ্যই উচিত এবিষয়ে পদক্ষেপ করা।’
কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘২০২৪ সালে শহরের রাস্তার উপরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন কেবল ও ব্রডব্যান্ড কোম্পানির তার আমরা খুলে ফেলার পদক্ষেপ করেছিলাম। সেসময় প্রশাসন থেকে আমাদের কাছে একটা মৌখিকভাবে চাপ এসেছিল। যে কারণে আমরা তা করতে পারিনি। বিষয়টি নিয়ে আমরা আবার প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জেলা শাসক অরবিন্দকুমার মিনা জানিয়েছেন।
রাজ আমলের প্রচুর সংখ্যক স্থাপত্য, ভবন, দিঘি দেখে ২০১৭ সালে জেলায় এক সরকারি অনুষ্ঠানে এসে কোচবিহার শহরকে হেরিটেজ শহর হিসেবে ঘোষণা করার সুপারিশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সুপারিশের পর কোচবিহারকে হেরিটেজ শহর হিসেবে ঘোষণা করার লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়। তারপর আইআইটি খড়্গপুর থেকে বেশ কয়েকবার বিশেষজ্ঞরা এসে কোচবিহার শহরকে সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। কিন্তু গোটা শহরের মধ্যে বিদ্যুতের তার এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেখে, শহরকে হেরিটেজ ঘোষণা করার ব্যাপারে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছিলেন।
অবশেষে আনুমানিক ৮০ কোটি টাকা খরচ করে শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুতের তার খুলে সেগুলিকে মাটির নীচ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও বর্তমানে কোচবিহার শহরের প্রায় অধিকাংশ রাস্তার উপরে প্লাস্টিকের বিভিন্ন নোংরা বোতল লাগানো অবস্থায় নানা কেবল ও ব্রডব্যান্ড তার এলোমেলোভাবে ঝুলে রয়েছে। এই ছবি দেখা যাবে শহরের প্রাণকেন্দ্র বিশ্বসিংহ রোড, মদনমোহনবাড়ি মোড়, কামেশ্বরী রোডের মতো জায়গায়। এই রাস্তাগুলোতে ঘুরলেই দেখা যাবে, তারগুলির কিছু অংশ ছিঁড়ে রাস্তার উপর ঝুলে পড়ে রয়েছে। আর সেইসব তারে পথচলতি বাসিন্দাদের যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি যানবাহন চালকরাও বিরক্ত। কবে এর থেকে মুক্তি মিলবে তার আশায় আছেন শহরবাসী।