কোচবিহার: এখন তাঁর ঠিকানা শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকা অতিথিনিবাস। এখান থেকেই সপ্তাহের পাঁচদিন জেলা পরিষদে যাচ্ছেন এবং ফিরে আসছেন সভাধিপতি সুমিতা বর্মন। তাঁর বাড়ি কোচবিহার-১ ব্লকের পুঁটিমারি ফুলেশ্বরী গ্রামে। দূরত্বের কারণে সেখান থেকে জেলা পরিষদ সামলানো কঠিন। সেকারণে অতিথিনিবাসকে দ্বিতীয় বাড়ি তৈরি করেছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি। তাঁর সঙ্গে থাকছেন পরিবারের অন্য সদস্যরাও। ছুটির দিনগুলিতে অবশ্য ছুটে যান ফুলেশ্বরী গ্রামে। তাঁর বক্তব্য, ‘অতিথিনিবাসে থেকেই জেলা পরিষদের কাজকর্ম পরিচালনা করতে হচ্ছে। বাড়ি থেকে আসার সময়টা এতে অনেকটাই বেঁচে যায়। পরিবার নিয়েই গত ছয় মাস ধরে এখানে রয়েছি।’
বর্তমান সময়ে অতিথিনিবাসে থেকে জেলা পরিষদ পরিচালনার নজির রাজ্যের কোথাও রয়েছে কি না, স্পষ্ট নয়। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারেন কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুমিতা। যদিও এই অতিথিনিবাসে তিনি প্রথম রয়েছেন, তা নয়। বাম জমানাতেও সভাধিপতিরা থেকেছেন। এক্ষেত্রে চৈতি বর্মন বড়ুয়া, অনন্ত রায়দের উত্তরসূরি তিনি। ১৯৯১ সালের ২২ জানুয়ারি তৎকালীন ভূমি ও ভূমি সংস্কার, পঞ্চায়েত দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ চৌধুরী অতিথিনিবাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তবে প্রতি সপ্তাহেই শুক্রবার সন্ধ্যায় সুমিতা পরিবার নিয়ে রওনা দেন পুঁটিমারির বাড়িতে। সেখানে দু’দিন কাটিয়ে রবিবার সন্ধেতে কিংবা সোমবার সকালের মধ্যে ফিরে আসেন। ২০২৩ সালে জেলা পরিষদের ভোটে জিতে সভাধিপতি হয়েছিলেন সুমিতা।
কিন্তু গান্ধিনগর সংলগ্ন এলাকায় সভাধিপতির থাকার বাংলো বা অতিথিনিবাস থাকার পরেও তাঁকে কেন এই অতিথিনিবাসে থাকতে হচ্ছে? জানা গিয়েছে, ওই ভবনটি পুরোনো হয়ে যাওয়ায় তা ভেঙে সেখানে ব্যাংকোয়েট হল তৈরির কাজ চলছে। জেলা পরিষদের অন্যান্য কাজ করার পাশাপাশি ওই কাজেরও তদারকি করতে হচ্ছে সভাধিপতিকে। প্রতিদিনের মতো এদিনও জেলা পরিষদে যাওয়ার মুহূর্তে নির্মীয়মাণ ভবনটির কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। দীর্ঘদিনের পুরোনো হওয়ায় ভবনটির শৌচালয় থেকে শুরু করে মেঝে এবং দেওয়ালের পরিস্থিতিও খারাপ হয়েছিল। সেকারণে গোটা ভবনটিই সংস্কার করতে উদ্যোগী হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এদিন সুমিতা আরও বলেন, ‘কর্মসূত্রে এখানে থাকায় ছেলেকেও এখানকার একটি স্কুলে ভর্তি করিয়েছি। তাই কাজের পাশাপাশি ছেলের পড়াশোনার জন্যও এখানে থাকতে হয়।’ বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জেলা শাসক সৌমেন মিত্র বলেন, ‘জেলা পরিষদের সভাধিপতিদের জন্য একটা বাংলো বরাদ্দ থাকে। ওঁর যেখানে পুরোনো বাংলো ছিল সেটা ভেঙে আমরা সেখানে ব্যাংকোয়েট হল বানাচ্ছি। সেজন্য বর্তমানে উনি এখানে রয়েছেন।’