উত্তরবঙ্গ ব্যুরো : বুধবার দেশজুড়ে ২৪ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি। এদিন সকাল ৬টা থেকে সেই ধর্মঘট শুরু হয়েছে। চলবে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। এর মিশ্র প্রভাব পড়েছে উত্তরবঙ্গে। ইতিমধ্যে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর আসতে শুরু করেছে উত্তরের নানা প্রান্ত থেকে।
এদিন বনধের সমর্থনে রায়গঞ্জে মিছিল করা হয়। এরপর সেখানে রেললাইন অবরোধ করেন বনধ সমর্থকেরা। অন্যদিকে, সকাল থেকে জলপাইগুড়ির বৌবাজারে দোকানপাট ছিল বন্ধ। পরে অবশ্য বাজার খুলতে পদক্ষেপ করে পুলিশ। ১৪ জন বনধ সমর্থককে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সকাল ৯টা পর্যন্ত শিলিগুড়িতে বনধের প্রভাব তেমন পড়েনি। হাসমি চকে অটো, স্কুলবাস সহ অন্য যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। বাগডোগরাতেও একই ছবি দেখা গিয়েছে।
তবে বনধকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে কোচবিহারে। এদিন সাগরদিঘি চত্বরে মিছিল করেন সমর্থকেরা। তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে প্রথমে বচসা ও পরে ধস্তাধস্তি হয়। বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অনন্ত রায়, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা, এসইউসিআই নেতা নেপাল মিত্র সহ অন্যরা। বনধের বিরুদ্ধে কোচবিহারে পালটা মিছিল করে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইইউসি। এদিন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে বলে জানিয়েছেন নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়।
দিনহাটায় মিছিল করেছে এসইউসিআই। তবে তা পাঁচমাথার মোড় আসার আগেই আটকে দেয় পুলিশ। ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিন সিপিএমের মিছিলে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে ঘাসফুল শিবির। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিন সিপিএমের ১১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নকশালবাড়িতে বনধ ঘিরে অশান্তির খবর মিলেছে। সেখানে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএমের নেতা-কর্মীরা। দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ। একজনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর। আবার চোপড়ার দাসপাড়া ও ঘিরনিগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতে ধর্মঘটে আংশিক সাড়া পড়েছে। ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিলের পাশাপাশি পথ অবরোধ করা হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।
বনধকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল মালদার চাঁচলে। পুলিশের সঙ্গে সমর্থকদের ধস্তাধস্তি হয়। তাঁদের চ্যাংদোলা করে গাড়িতে তোলে পুলিশ। এদিন বনধ সফল করতে ময়দানে নেমেছিলেন সিপিএম নেতারা। আর বনধ ব্যর্থ করতে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের চাঁচল-১ ব্লক সভাপতি অমিতেশ পান্ডের নেতৃত্বে আসরে নামেন দলের কর্মীরা। সরকারি বাস চললেও মালদা-চাঁচল রুটে বেসরকারি বাস চলাচল বন্ধ ছিল।
এদিকে, ধর্মঘট সফল করতে এদিন সকালে বালুরঘাটের সরকারি বাসস্ট্যান্ডের সামনে জমা হন বনধ সমর্থকেরা। পরে পুলিশ এসে তাঁদের সরিয়ে দেয়। বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।