অরিন্দম বাগ, মালদা: মাত্র ২ হাজার টাকাতেই পাওয়া যাচ্ছে ব্রাউন সুগারের ক্যারিয়ার! কালিয়াচকের গ্রামীণ এলাকার তরুণদের সামান্য টাকার টোপ দিয়েই কোটি কোটি টাকার ব্রাউন সুগার পাচারের ক্যারিয়ার হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে মাদক কারবারিরা। মালদা টাউন স্টেশন থেকে ধৃত দুই তরুণকে জেরা করে এমনই তথ্য পেয়েছে জিআরপি। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে প্রতিদিনই পাচারের কোনও না কোনও নতুন পদ্ধতি খুঁজে বের করছে মাদক কারবারিরা। এবার সাবান কেসে মাদক পুরে পাচারের ছক কষেছিল। কিন্তু জিআরপি’র তৎপরতায় পাচারকারীদের সেই চেষ্টা ভেস্তে যায়। পাচারের আগেই দেড় কোটি টাকার ব্রাউন সুগার সহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করে মালদা টাউন স্টেশনের জিআরপি। মাদক পাচারের পান্ডাদের হদিস পেতে ধৃতদের জেরা করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। সেজন্য শনিবার ধৃতদের সাতদিনের পুলিশি হেপাজতের আবেদন জানিয়ে মালদা জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে জিআরপি থানার পুলিশের কাছে খবর আসে, কালিয়াচক থেকে দুই মাদক কারবারি মালদা টাউন স্টেশনে এসেছে। মালদা থেকে রেলপথে মাদক পাচারের ছক কষেছে মাদক কারবারিরা। সেই তথ্যের ভিত্তিতে মালদা টাউন স্টেশনে ওঁত পেতেছিলেন জিআরপি থানার অফিসাররা। শুক্রবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ মালদা টাউন স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের শেষ প্রান্তে দুই ব্যক্তির সন্দেহজনক গতিবিধি নজরে আসে জিআরপি’র। তারপরেই ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। সন্তোষজনক উত্তর না পেয়ে তল্লাশি চালাতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় জিআরপি’র। ওই দুই ব্যক্তির হেপাজতে থাকা ব্যাগ থেকে তিনটি সাবানের কেস উদ্ধার হয়। তিনটি সাবানের কেস থেকে ৩১৬ গ্রাম ব্রাউন সুগার বাজেয়াপ্ত করে জিআরপি থানার পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় নাজিব আক্তার (২৪) ও মহম্মদ ফিরোজ মোমিন (৩৭) নামে দুই তরুণকে। ধৃতদের বাড়ি কালিয়াচকের যদুপুর এলাকায়।
জিআরপি থানার আইসি প্রশান্ত রাই বলেন, ‘গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে মালদা টাউন স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের হেপাজত থেকে ৩১৬ গ্রাম ব্রাউন সুগার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হওয়া ব্রাউন সুগারের আনুমানিক বাজারমূল্য দেড় কোটি টাকা। প্রাথমিক জেরায় জানা গিয়েছে, ধৃতরা উদ্ধার হওয়া ব্রাউন সুগার কালিয়াচক থেকে কাটিহারে নিয়ে যাচ্ছিল। এই কাজের জন্য দুজনকে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। ধৃতরা উদ্ধার হওয়া ব্রাউন সুগার কার থেকে নিয়েছিল, কাকে সেই মাদক দেওয়ার কথা ছিল, তা জানতে ধৃতদের সাতদিনের পুলিশি হেপাজতের আবেদন জানিয়ে আজ মালদা জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে।’