পঙ্কজ মহন্ত, বালুরঘাট: গণেশপুজোয় (Ganesh Puja) মেতে উঠেছে বালুরঘাটবাসী (Balurghat)। আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ১৫ ফুট উচ্চতার গণেশ প্রতিমা। উত্তমাশাপল্লি গণেশপুজো কমিটির এবছরের চমক এই বিশাল উচ্চতার প্রতিমা। পুজো ঘিরে বসেছে বিরাট মেলা। খেলনা, মনোহারী সামগ্রী, খাবারের দোকান সব জায়গায় ভিড় উপচে পড়ছে।
১২ বছর ধরে এলাকাবাসী এই পুজোর আয়োজন করছেন। বর্তমানে এই কমিটিতে ২৫ জন সদস্য রয়েছেন। এই পুজোর একটি বিশেষত্ব হল এখানে কারও থেকে চাঁদা নেওয়া হয় না। খুশি মনে যে যা দেন তা দিয়ে পুজোর আয়োজন করা হয়। বুধবার এই পুজোকে ঘিরে এলাকাবাসী মণ্ডপে জমায়েত হয়েছিলেন। মেলায় বিকিকিনি বেশ ভালো হয়েছে। বিশেষ করে খুদেদের নজর ছিল মনোহারী সামগ্রীর দিকে।
এবারের গণেশ বন্দনার সূচনা হয়েছে বসে আঁকো প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে। এদিন সকালে হোম ও যজ্ঞের মধ্য দিয়ে পুজোর মূল আচারগুলি পালিত হয়। সন্ধ্যাবেলায় এলাকার মহিলাদের নিয়ে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি ও মোমবাতি জ্বালানো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার কমিটির পক্ষ থেকে হাঁড়ি ভাঙা ও বাস্কেট বল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার উত্তমাশা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করা হবে। রবিবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণের মধ্যে দিয়ে উৎসব শেষ হবে।
এই পুজোর উদ্যোক্তা অপূর্ব চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের পুজোয় প্রতি বছর কেউ না কেউ প্রতিমার জন্য একটি করে সোনার টিপ দান করেন। গত চার বছর ধরে এই প্রথা চলছে। কমিটির পক্ষ থেকে চাঁদা তোলা হয় না। কেউ নিজের থেকে সাহায্য করলে আমরা তা গ্রহণ করি।’ তিনি জানান, এবছর তাঁদের পুজোর প্রতিমাটি গড়েছেন খিদিরপুরের মৃৎশিল্পী সঞ্জয় নট্ট।
পুজোর পাশে মেলায় দোকান দিয়েছেন পতিরামের বাসিন্দা শ্যামল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘বেশ অনেক বছর ধরে এখানে গণেশপুজো হয়। কিন্তু আগে পুজোকে কেন্দ্র করে মেলা বসত না। গত বছর থেকে এই মেলায় দোকান দিচ্ছি। বেশ ভালোই ব্যবসা হয়।’ পুজোর বেশিরভাগ কাজের দায়িত্ব নিয়েছেন এলাকার মহিলারা। পুজোর দায়িত্বে থাকা কেয়া রায় কর্মকার বলেন, ‘আমরা মহিলারা মিলে পুজোর জোগাড় করি। পুজো ঘিরে খুব আনন্দ হয়। কেউ উলুধ্বনি দিচ্ছেন, কেউ শঙ্খ বাজাচ্ছেন আবার কেউ কাঁসর বাজাচ্ছেন।’ অপরদিকে শহরের প্রিন্স ক্লাব মোড় বারোয়ারি পুজো কমিটি পাঁচ বছর ধরে গণেশপুজো করছে। এবছর তাদের প্রতিমায় নতুনত্ব রয়েছে। গণেশের হাতে বাঁশি এবং মূর্তিতে ময়ূরের পালক রয়েছে। কৃষ্ণের রূপে সাজানো হয়েছে দেবতাকে। পাশাপাশি, চকভৃগু, রঘুনাথপুর, বিশ্বাসপাড়া, সাড়ে তিন নম্বর মোড়, টাউন ক্লাব সহ বিভিন্ন এলাকায় গণেশপুজোর আয়োজন করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় জমেছে। কোথাও প্রতিমার গলায় টাকার মালা আবার কোথাও ঝলমলে আলোকসজ্জা। ভক্তি এবং উৎসবের রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে শহর।