বালুরঘাট: পরীকায়ার জেরে জল অনেকটাই গড়িয়ে একাকার কাণ্ড। স্ত্রীকে বাপের বাড়ি ঘুরতে পাঠিয়ে স্বামী তার প্রেমিকাকে ডেকে এনে ঘরে লুকিয়ে রেখেছিল। ঘটনাটি নজরে আসার পর মা তার প্রতিবাদ করেন। ছেলে কোথায় লজ্জিত হবে তা নয়, সে প্রকাশ্যেই তার অসুস্থ মাকে বেধড়ক মারধর করল। এমনকি সে তাঁকে গলা টিপে খুনের চেষ্টা করেও বলে অভিযোগ। নিজের প্রাণ বাঁচাতে ওই প্রৌঢ়াকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়। প্রতিবেশীদের সাহায্যে পরে বালুরঘাট থানায় উপস্থিত হয়ে ওই প্রৌঢ়া ছেলে ও তার প্রেমিকার বিরুদ্ধে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে আইসি সুমন্ত বিশ্বাস জানিয়েছেন।
বালুরঘাট ব্লকের চিঙ্গিসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্গাপুর এলাকার এক বাসিন্দা ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁর অসুস্থ স্ত্রী এলাকায় একটি খাবারের দোকান করে কোনওরকমে সংসার চালান। দম্পতির তিন ছেলে। তাঁরা সকলেই আলাদা থাকেন। দম্পতির বড় ছেলে পাশের জমিতে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে বাড়ি করে থাকে। স্ত্রীর বাপের বাড়ি দিল্লিতে। বিয়ে হয়েছে ১১ বছর। এই সময়কালে ওই মহিলা একদিনও তাঁর বাপের বাড়িতে যাননি। ওই মহিলার ভাই কিছুদিন আগে দিদির বাড়িতে আসেন। পরে তিনি দিদিকে দিল্লিতে নিয়ে যান।
অভিযোগ, তারপরই ওই মহিলার স্বামী নিজের প্রেমিকাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার সকালে সে কাজে চলে যায়। প্রেমিকাকে ঘরে রেখে সে তাতে তালা মেরে গিয়েছিল। কীর্তিমান ছেলের মা এদিন ওই ঘরে নড়াচড়া টের পান। ঘরে চোর ঢুকেছে মনে করে তিনি চিৎকার শুরু করেন। শুনে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। হইহট্টগোল শুনে প্রৌঢ়ার বড় ছেলেও সেখানে আসে। কিছুক্ষণের মধ্যেই গোটা ঘটনাটি সবার সামনে পরিষ্কার হয়ে যায়। ওই প্রৌঢ়া ছেলেকে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করেন। বিষয়টি ছেলে সহজে মেনে নেয়নি। সে সবার সামনেই ওই প্রৌঢ়াকে কিল, চড়, লাথি মারতে শুরু করে। মারধরে ওই প্রৌঢ়া অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পরে তিনি কোনওমতে বলেন, ‘ছেলে আমাকে প্রচণ্ডভাবে মারধর করেছে। ও আমার গলা টিপে খুনের চেষ্টা করেছিল। মারধরে ওর প্রেমিকা ওকে সমানে ইন্ধন দিচ্ছিল। কোনওরকমে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিই। পরে পুলিশে অভিযোগ জানাই।’ শাশুড়ির কাছে খবর পাওয়ার পর ছেলের স্ত্রী দিল্লি থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। দম্পতির দুই ছেলে। তাঁর অনুপস্থিতিতে স্বামী এমন কোনও কাণ্ড করতে পারেন তা তিনি বিশ্বাসই করে উঠতে পারছেন না। অন্যদিকে, ঘরে যে মহিলাকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল তার ১৬ বছর বয়সি এক মেয়ে রয়েছে। প্রৌঢ়ার বড় ছেলে তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়েই ঘরে এনে তুলেছিল বলে ওই মহিলার দাবি। গোটা ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চর্চা চলছে।