বালুরঘাট: সরকারি, বেসরকারি অফিস এমনকি সরকারি আবেদনপত্রেও বাংলা ভাষার ব্যবহার যথেষ্ট হারে কমে আসছে। এমনই দাবি তুলে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাশাসকের দ্বারস্থ হলেন বালুরঘাট পুরসভার পৌরাধ্যক্ষ পরিষদের সদস্য তথা শিক্ষক বিপুল কান্তি ঘোষ। শুক্রবার তিনি বালুরঘাট পুরসভা সহ দক্ষিণ দিনাজপুরের বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অফিস, আদালত সমস্ত ক্ষেত্রে ‘বাংলায়’ সাইনবোর্ড লেখার প্রস্তাব লিখিত আকারে দিয়েছেন। এদিন জেলা শাসকের কাছে তার অনুমোদনের জন্য স্মারকলিপি পেশ করে জানিয়েছেন, বাংলা ভাষার ব্যবহার কমে আসার বিষয়টি উদ্বেগজনক।
বাংলা ভাষা আজ ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেয়েছে। যা বিশ্বব্যাপী একটি সমৃদ্ধ ভাষা হিসেবে সমাদৃত। কিন্তু সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাইনবোর্ডে বাংলা ভাষার ব্যবহার কমে আসায় বিভিন্ন সময়ে প্রচুর মানুষ আক্ষেপ প্রকাশ করেন। এবার বাংলা ভাষাকে সকলের সামনে বেশি মাত্রায় তুলে ধরতে উদ্যোগী হলেন পুরসভার এমসিআইসি বিপুল কান্তি ঘোষ। এই জেলায় সংস্কৃতি মনোভাবাপন্ন মানুষের বাস। সেখানে বাংলা ভাষার ব্যবহার কমে আসায় তিনি চিন্তিত। বালুরঘাট পুরসভা সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় মূলত ইংরেজি ভাষায় সাইনবোর্ড নজরে পড়ে। যা গভীরভাবে মনে দাগ কেটেছে তার। তিনি এদিন জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে সরকারি বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান, বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, দোকানঘর ও বিভিন্ন সাইন বোর্ডে এমনকি সরকারি আবেদনপত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার কমে আসছে বলে জানান। যে ভাষার মর্যাদাকে অক্ষুন্ন রাখতে বাঙালি শহীদ হয়েছেন। সেই প্রাণের ভাষাকে আবশ্যিক করার আবেদন করেন তিনি। প্রত্যেকটি জায়গায় ও সরকারি আবেদন পত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার আবশ্যিক করার পাশাপাশি তিনি তার নিচে ইংরেজি বা হিন্দী ভাষা যুক্ত করারও কথা বলেছেন। জেলাশাসকও এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন বলেও দাবি করেন বিপুলবাবু।
বালুরঘাট পুরসভার জনপ্রতিনিধি বিপুল কান্তি ঘোষ জানান, ‘আমি উপলব্ধি করেছি পুরসভা এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন হোর্ডিং, ব্যানার, দোকান ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষার ব্যবহার অনেকটা কমে এসেছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ। আমাদের মাতৃভাষা মনীষীদের ভাষা। পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীও বাংলাকে তুলে ধরতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের অলক্ষে বাংলা ভাষার ব্যবহার কমে যেতে দেখছি। দক্ষিণ ভারত থেকে এখানে এসে জেলাশাসক সাবলীল বাংলা বলছেন। তিনিও আমার প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলেছেন।’