বালুরঘাট: টোটোভাড়া মেটায়নি যাত্রী। ওই পাওনা টাকা চাইতে যান টোটোচালক। আর তাতেই বাধে বিপত্তি। হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। টাকা চেয়ে অপমানের প্রতিশোধ নিতে চালকের বাড়ি গিয়ে মধ্যরাতে টোটো জ্বালিয়ে দেয় ওই যাত্রী। টোটো পোড়ার গন্ধ পেয়ে স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করেন। কিন্তু টোটোটির ততক্ষণে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। ঘটনাটি শুক্রবার গভীর রাতে বালুরঘাট শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের অত্রি কলোনিতে ঘটে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বালুরঘাট থানার পুলিশ।
এবিষয়ে বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘টোটোচালকের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতেই একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
শুক্রবার মধ্যরাতে টোটোয় আগুন লাগিয়ে পালাতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে যায় ওই অভিযুক্ত যাত্রী। তাকে আটকে রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে পুলিশের সামনেই দাদাগিরি দেখাতে থাকে ওই তরুণ। কেন বাড়ি বয়ে ভাড়ার টাকা চাইবে চালক? এই অভিযোগ তুলে পুলিশের সামনে টোটোচালক দীপক বর্মনকে মারতে উদ্যোগী হয় যাত্রী সরকার।
কৃষ্ণ এলাকায় ডানপিটে ছেলে বলে পরিচিত। এই বছর দুয়েক আগেই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এলাকায় দাপাদাপি করার অভিযোগে ধরেছিল পুলিশ। আর এবারে পাওনা টাকা চাওয়ায় টোটো জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় সে। এদিন ধৃতকে বালুরঘাট আদালতে পেশ করা হয়েছে।
সপ্তাহখানেক আগে অত্রি কলোনির বাসিন্দা দীপক বর্মনের টোটো ভাড়া করেছিল কৃষ্ণ। ওইদিন নিজের কাজে দিনভর টোটো নিয়েই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছে কৃষ্ণ। বাড়ি ফিরে এসে চুক্তিমতো ৫০০ টাকা ভাড়া মেটায়নি। প্রতিবেশী হওয়ায় দীপকও তৎক্ষণাৎ পাওনা টাকার জন্য চাপ দেননি। তবে ৩-৪ দিন পেরিয়ে গেলেও টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে উচ্চবাচ্য না করায় গত শুক্রবার বিকেলে কৃষ্ণের কাছে ওই পাওনা টাকা চাইতে যান দীপক। তখনই দুজনের মধ্যে শুরু হয় বচসা। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। তবে ওই সময় কয়েকজনের হস্তক্ষেপে বিবাদ থেমে যায়।
রাতে বাড়ির সামনে টোটো রেখে দীপক ঘুমিয়ে পড়েন। অভিযোগ, মধ্যরাতে কৃষ্ণ টোটোটিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এদিকে পোড়া গন্ধে ঘুম ভেঙে যায় টোটোচালক ও পড়শিদের। বাইরে বেরিয়ে এসে দেখতে পান টোটো জ্বলছে। এদিকে স্থানীয়রা ওই জ্বলন্ত টোটোর আশপাশে দেখতে পান কৃষ্ণকে। স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
কেন আপনার টোটো জ্বালানো হল? এই প্রশ্ন করায় দীপকের উত্তর, ‘আমার পাওনা টাকা দিচ্ছিল না। আমি শুধু কবে ধার মেটাবে তা জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাতে সে আমাকে মারধর করে। এরপরে রাতে টোটো পুড়িয়ে দিয়েছে। উপার্জনের একমাত্র ভরসা ওই টোটোটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কী করব ভেবে উঠতে পারছি না।’