পঙ্কজ মহন্ত, বালুরঘাট: শোলা শিল্প প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। গ্রাম বাংলার সেই শিল্পকেই আবার পুনর্জীবিত করতে উদ্যোগী হলেন বালুরঘাট কলেজের স্নাতকোত্তরের পড়ুয়া দেবজ্যোতি মোহরার। বালুরঘাট শহরের নেপালি পাড়ার বাসিন্দা দেবজ্যোতি মূলত মুকুট ও সাজ শিল্পী। সম্প্রতি দীঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন হয়েছে। মূলত সেই উদ্যোগকে সম্মান জানাতে তিনি শোলা দিয়ে প্রায় দেড় ফুট উচ্চতার জগন্নাথ মূর্তি তৈরি করেছেন। এমনকি সুতো, জড়ি, চুমকি, পাথর দিয়ে তৈরি করেছেন অপরূপ মুকুট। তার এই শিল্প প্রতিভা ইতিমধ্যেই বালুরঘাট তথা জেলায় সাড়া ফেলেছে।
অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্য তিথিতে দীঘার সমুদ্রতটে মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করেন। এই মন্দির তৈরির পরে যেমন রাজ্যের অর্থনীতির উন্নতি হবে, ঠিক তেমনি জগন্নাথ নিয়ে বাঙালির ভাবাবেগ আরও একধাপ এগিয়ে গেল বলে দেবজ্যোতির মত। এই মন্দির উদ্বোধনের পরেই তিনি জগন্নাথের মূর্তি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক সেইখানেই তিনি প্রায় হারিয়ে যেতে বসা শোলা শিল্পকে তুলে ধরার পরিকল্পনা করেন। সেই অনুযায়ী রাত জেগে ১২ ঘন্টার পরিশ্রমের ফলে সকলের সামনে এসেছে তার জগন্নাথের মূর্তি। যা তৈরি করতে তার প্রায় হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতিমধ্যেই তার সেই মূর্তি সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন স্তর থেকে আবেদন এসেছে। এর আগে দেবজ্যোতির বানানো গহনার কাজ মার্কিন মুলুকে রপ্তানি হয়েছে। এমনকি জেলার সর্বোচ্চ মুকুট গড়েছেন তিনি। এবার বাংলার ঐতিহ্য রক্ষায় নিজেকে উজাড় করে দিতে চান দেবজ্যোতি। তার মুকুট ও সাজ শিল্পের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে সাত থেকে আটজনকে স্বনির্ভরতার দিশা দেখাতে পেরেছেন তিনি। সেই দিক থেকেও তার অদম্য লড়াই চলছে। আগামীতে শোলা নিয়ে আরও কাজ করার আগ্রহ রয়েছে বলেও তিনি জানান।