পহেলগাঁও: জঙ্গি হামলার মাঝেই যেন এসে দাঁড়াল সাক্ষাৎ দেবদূত! পহেলগাঁওতে যখন পর্যটকদের উপর এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছিল জঙ্গিরা, তখনই জীবন বাজি রেখে দেবদূতের মতো এসে হাজির হন স্থানীয় গাইড নাজাকাত আহমেদ শাহ। নাজাকাতের সেই বীরত্ব ও সাহসিকতার কথা জানিয়েছেন খোদ বিজেপি-র ছত্তিশগড়ের যুব মোর্চার নেতা অরবিন্দ আগরওয়াল।
তিনি জানান, জঙ্গি হামলার সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের রক্ষা করেন নাজাকাতই। শুধু স্থানীয় গাইড নন, তাঁর আরও একটা পরিচয় রয়েছে। তিনি হলেন সইদ আদিল হুসেন শাহের খুড়তুতো ভাই। জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছে যে আদিলের। পর্যটকদের ঘোড়ায় চড়াতেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, এক জঙ্গির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন সইদ। পর্যটকদের রক্ষা করতে রুখে দাঁড়ান। তাঁকেও গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় জঙ্গিরা।
বন্ধুদের সঙ্গে স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন অরবিন্দ। ৩৫ বছর বয়সি অরবিন্দ ছত্তিশগড়ের বিজেপি যুব শাখার সদস্য। তিনি জানান, ওই দিন তিনি তাঁর স্ত্রী পূজা এবং চার বছরের মেয়ে বৈসরন উপত্যকাতেই ছিলেন। যখন জঙ্গিরা আচমকা গুলি চালানো শুরু করে, তাঁরা সে সময়ে কিছুটা দূরে ছিলেন। অরবিন্দ জানিয়েছেন, সেই মুহূর্তে বছর আঠাশের যুবক, স্থানীয় গাইড নাজাকত আহমেদ শাহ ছিলেন তাঁদের সঙ্গেই।
জঙ্গি হামলা শুরু হতেই কয়েকজন পর্যটক আগেভাগেই নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেন। তাঁরা সঙ্গে নিয়ে যান অরবিন্দকেও। কিন্তু তাঁর স্ত্রী-কন্যা ঘটনাস্থলেই রয়ে যান। অরবিন্দ জানান, “নাজাকত ওখানেই ছিলেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে মাটিতে শুয়ে পড়তে বলেন এবং আমার মেয়ে ও আমার বন্ধুর ছেলেকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেন। যতক্ষণ গুলি চলে, মাটিতে মিশে জাপটে ধরে রাখেন ওদের। তাতেই প্রাণ বাঁচে ওদের।”
এরপর নাজাকত সবাইকে একটি কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে বার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান এবং তারপর আবারও ফিরে যান গুলিবিধ্বস্ত বৈসরনে। কারণ অরবিন্দর স্ত্রী পূজা তখন নিখোঁজ! প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে রীতিমতো প্রাণ হাতে করে গিয়ে পূজাকে খুঁজে পান তিনি। উদ্ধার করে নিয়ে আসেন । এরপরে নিজের গাড়িতে করে অরবিন্দর পরিবারকে নিরাপদে শ্রীনগরে পৌঁছে দেন তিনি নিজে। প্রাণ বাঁচিয়ে এখন তাই নাজাকতকেই ‘দেবদূত’ মানছেন বিজেপি নেতা।