শিয়ালের উপদ্রব রুখতে শহরে ‘অভয়ারণ্য’ তৈরির পরিকল্পনা, নিউটাউনে শুরু জমি চিহ্নিতকরণ

শিয়ালের উপদ্রব রুখতে শহরে ‘অভয়ারণ্য’ তৈরির পরিকল্পনা, নিউটাউনে শুরু জমি চিহ্নিতকরণ

জীবনযাপন/LIFE STYLE
Spread the love


দিশা ইসলাম, সল্টলেক: শহরে শিয়ালের আস্তানা তৈরির পরিকল্পনা! আধুনিক নিউটাউন শহরের বুকে শিয়ালের উৎপাত ঠেকাতে এই পরিকল্পনার কথা জানা গিয়েছে প্রশাসন মহল থেকে। অভিনব এই ভাবনা বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে নিউটাউন শহর কর্তৃপক্ষ হিডকো ও এনকেডিএ প্রশাসন। নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া ২-এর কদমপুকুর এলাকার কাছে সবুজ ঘেরা একটুকরো জঙ্গল আকারের জমি চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সবুজ সংকেত মিললেই প্রকল্পের কাজে হাত পড়বে।”

সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে কলকাতার স্মার্ট শহর হল নিউটাউন। আধুনিক এই শহরের বুকে ক্রমশ বাড়ছে শিয়ালের উপদ্রব। দিনেও এই বণ্যপ্রাণীদের হামেশা রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। প্রায় রাতে সেই পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠছে। শহরের বাসিন্দাদের বক্তব্য, নিশুত রাতে ফ্ল্যাটের পাঁচিলের মধ্যে ঢুকে পড়ছে শিয়াল। যার দাপাদাপিতে বাড়ির ছোট-বড়রা আতঙ্কিত হচ্ছেন। আবার ব্যস্ত রাস্তা পারাপারের সময়ে নিউটাউন-শাপুরজিগামী মেন রোডে ‘পথ দুর্ঘটনা’য় এক শিয়ালের মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছিল। মাসকয়েক আগের মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনার দৃশ্য সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করে ক্ষোভউগরে দিয়েছিলেন শহরের একাংশ বাসিন্দা।

নিউটাউন শহর লাগোয়া রাজারহাট ও ভাঙড় ব্লক। রাজারহাটের গ্রামীণ এলাকার মধ্যে রয়েছে চাঁদপুর, পাথরঘাটা, বিষ্ণুপুর ইত্যাদি অঞ্চল। আর ভাঙড় অংশে কোঁচপুকুর, কাঁঠালবেড়িয়া, যতভীম, কুলবেড়িয়া, হাতিশালা প্রভৃতি এলাকা। স্থানীয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি গ্রামীণ এই দুই এলাকায়ও শিয়ালের উপদ্রব বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ বাড়ছে রাতে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অসাবধান হলেই গভীর রাতে গৃহপালিত হাঁস-মুরগি টেনে নিয়ে যাচ্ছে শিয়াল। আবার গ্রামীণ এলাকার অন্ধকারাচ্ছন্ন রাস্তায় মোটরবাইক বা সাইকেল নিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে তৈরি হচ্ছে ভোগান্তি। মাঝেমধ্যে হঠাৎ দু’চাকা যানের সামনে চলে আসছে শিয়াল। ফলে গভীর রাতে গাড়ির হ্যান্ডল কেঁপে ছোটখাটো দুর্ঘটনার কথাও জানিয়েছেন পথচারীরা।

কেন এই উৎপাত? প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজারহাট এবং পূর্ব কলকাতার একাংশ ভাঙড় – দুই গ্রামীণ এলাকার একাংশ জলাভূমি বুজিয়ে ও জঞ্জাল কেটে গড়ে উঠেছে কংক্রিটের নিউটাউন। ফলে নগরোন্নয়নের ফলে চরম বিপাকে পড়ছে শিয়াল, সাপ, বেজি প্রভৃতি জন্তু। ক্রমশ কমছে শেয়ালের খাবার ও বাসস্থান। তাই পরিবেশের সঙ্গে লড়ার করে বেঁচে থাকতে খাবারের খোঁজে শিয়াল ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। আর শহরে সেই উপদ্রবে আবাসিকদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। আর তা ঠেকাতে নিউটাউন শহরে শিয়ালদের ‘অভয়ারণ্য’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। জানা গিয়েছে, সেখানে শিয়ালদের আনাগোনা বাড়াতে মুরগি, হাঁস, মেঠো ইঁদুর প্রভৃতি পছন্দের খাবারও মজুত রাখা হবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *