শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: জঙ্গলচেরা রেলপথ ও জাতীয় সড়কের ধারে নির্বিচারে প্লাস্টিক ফেলা হচ্ছে। এর জেরে বন্যপ্রাণীদের জীবন বিপন্ন। পথচারী ও রেলযাত্রীরা যাতায়াতের সময় বিভিন্ন প্যাকেটজাত খাবার, চিপসের প্যাকেট ওইসব রাস্তায় ফেলে যান। খাবারের গন্ধে বুনোরা আকৃষ্ট হয়ে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে অনেক সময় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। এর আগে হাতির বিষ্ঠায় প্লাস্টিকের দেখা মিলেছে। বিষয়টি নিয়ে বন দপ্তর যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। বৃহস্পতিবার বনকর্মীরা জলদাপাড়া, চাপড়ামারি ও মহানন্দা অভয়ারণ্যের বুক চিরে যাওয়া রেললাইন থেকে দুই পিকআপ ভ্যান ভর্তি প্লাস্টিক আবর্জনা সাফাই করলেন। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জেভি বলেন, ‘বুনোরা খুব সহজে প্লাস্টিক বর্জ্যে আকর্ষিত হয়। যে কারণে রেললাইন বা জাতীয় সড়কের করিডরে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া প্লাস্টিক বুনোদের জন্যও অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি রেলযাত্রীদের মধ্যে এবিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে রেল দপ্তরকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানানো হবে।’
শিলিগুড়ি জংশন থেকে আলিপুরদুয়ার জংশন পর্যন্ত ১৬৮ কিলোমিটার রেলপথে মহানন্দা, চাপড়ামারি, জলদাপাড়ার মতো জাতীয় উদ্যান বা অভয়ারণ্য ছাড়া মংপং, ডায়নার মতো একাধিক জঙ্গল আছে। বর্তমানে রেল ও বন দপ্তরের যৌথ সমন্বয়ে রাশ টানা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু আগে এই পথে ট্রেনের ধাক্কায় বেশ কয়েকটি হাতি, বাইসন ও চিতাবাঘের মৃত্যু হয়েছে। সেসব দুর্ঘটনা প্লাস্টিকের প্রতি আকর্ষিত হয়ে এমনটা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব না হলেও জঙ্গলপথের প্লাস্টিক যে বুনোদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে তা নিয়ে বনকর্তারা নিশ্চিত।
এদিনের জঙ্গলের রেলপথ ও জাতীয় সড়ক থেকে অপারেশন ক্লিনিং প্লাস্টিকে বিভিন্ন এলাকার যৌথ বন পরিচালন সমিতির সদস্য, স্থানীয় বাসিন্দা, পঞ্চায়েত প্রতিনিধি ও প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠনগুলি বনকর্মীদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। পুনডিং, খৈরানি, মাদারিহাট ও কোদালবস্তি এলাকার বন পরিচালন সমিতির সদস্যরা এতে অংশ নেন। প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠনগুলির মধ্যে ঐরাবত, ভয়েস ফর অ্যানিমালের মতো আরও কয়েকটি সংগঠন ছিল।