অর্ণব দাস, বারাসত: ‘পার্থ ভৌমিক ওখান থেকে চাবি ঘোড়াবে, আর এখানে মিটিং হবে। সেই মিটিংয়ে আমি থাকব না।’ তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় বারাকপুর লোকসভার সাংসদের বিরুদ্ধে এভাবেই আক্রমণ শানালেন রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। সোমবার গোবরডাঙা পুরসভার টাউনহলে তাঁর বক্তব্যে এই ভিডিও ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল। যা নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে শাসক শিবির।
উল্লেখ্য, বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পর বিশ্বজিৎ দাস প্রথম যে বৈঠক ডেকেছিলেন, দিল্লিতে থাকার কারণে সেই বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি, রাজ্যসভার সাংসদ তথা সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান মমতাবালা ঠাকুর। এই ঘটনার পর থেকেই শুরু বিবাদ। কর্মিসভায় সেই কথা উল্লেখ করে মমতাবালা ঠাকুর জানান, দিল্লিতে থাকার কারণে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারব না বলে সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসকে অন্যদিকে বৈঠক ডাকতে বলেছিলাম। কিন্তু পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে সেইদিনই বৈঠক করা হয়। এরপরই তাঁর আক্রমণ, “পার্থ ভৌমিক কোন দায়িত্বে আছে, আমার জানা নেই। বিশ্বজিৎই বা কেন তাকে (পার্থ ভৌমিক) ফোন করে মিটিংয়ের কথা বলল, সেটাও আমার জানা নেই। আর যদি দায়িত্ব নিতে হয়, তাহলে পার্থ ভৌমিক এসে মিটিংয়ে করবে। সেই মিটিংগুলিতে আমি থাকব না। তার কারণ হচ্ছে, পার্থ ভৌমিক ওখান থেকে ঘোড়াবে, চাবি দেবে। আর এখানে মিটিং হবে, সেই মিটিংয়ে আমি থাকব না।”
তাঁর এই বক্তব্যের পর কর্মিসভা শেষ হতেই তৃণমূলের একাংশ মমতাবালা ঠাকুরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি কটুক্তি করে বলে অভিযোগ। ফলে তুলনামূলকভাবে দুর্বল বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় শাসক দলের অন্দরে চিড় আরও গাঢ় হয়। মতুয়া মহাসংঘের তরফে এনিয়ে গাইঘাটা থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে। সংঘের সদস্য তুষারকান্তি বিশ্বাস জানিয়েছেন, “বৈঠক শেষে বেরনোর পরে মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুরকে এক শ্রেণির মানুষ যে ভাষা প্রয়োগ করেছে, ঠিক করেনি। আমরা সংঘের তরফে এর তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। গাইঘাটা থানায় এনিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে।”
ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সাংসদ পার্থ ভৌমিক অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির সদস্য তথা রাজ্য সম্পাদক, একথা মনে করিয়ে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান মমতাবালা ঠাকুর আমাদের নেতা পার্থ ভৌমিকের সম্পর্কে যে কথাগুলি বলেছেন, সেটা ঠিক বলেননি। ৯৮সাল থেকে বনগাঁর কর্মীদের সঙ্গে পার্থ ভৌমিকের পরিচয়। যখনই আমরা পার্থ ভৌমিককে ডেকেছি, পাশে পেয়েছি। কখনই উপযাজক হয়ে উনি (পার্থ ভৌমিক) উপদেশ দিতে আসেননি। স্বাভাবিক কারণে এখানকার কর্মীদের সঙ্গে পার্থ ভৌমিকের নিবিড় সম্পর্ক। তাই ওঁর (পার্থ ভৌমিক) বিরুদ্ধে কথা কর্মীরা ভালভাবে নেয়নি বলেই উত্তেজিত হয়েছিলেন।”