সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে যখন পশ্চিম এশিয়ার বাতাসে বারুদের গন্ধ, শঙ্কিত গোটা বিশ্ব, তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করলেন, খুব শিগগির শান্তি কায়েম হবে মধ্যপ্রাচ্যে। ঠিক যেভাবে মধ্যস্ততা করে ভারত ও পাকিস্তানের সংঘর্ষ থামিয়েছিলেন তিনি, সেভাবেই ইরান এবং ইজরায়েলকেও বোঝাপড়ায় আসবে। অর্থাৎ কিনা ইরান-ইজরায়েল নিয়ে বলতে গিয়ে ফের ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত থামিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব দাবি করলেন ট্রাম্প। কার্যত নিজেকে বিশ্বশান্তির দূত ঘোষণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
গত শুক্রবার ইরানে হামলা চালায় ইজরায়েল, পালটা হামলা চালায় ইরানও। দুই দেশের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা অব্যাহত। এই অবস্থায় রবিবার সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, “ইরান এবং ইজরায়েলের বোঝাপড়ায় আসা উচিত আর তারা সেটা করবেও।” দাবি করেন, যুদ্ধ থামাতে ফোনে কথা চলছে, বৈঠকও হচ্ছে। তিনি নিজে নাকি অনেক কিছু করছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষায়, “যদিও আমি কোনও কিছুর জন্যই কৃতিত্ব চাই না। মানুষ সব বোঝে। চলুন, পশ্চিম এশিয়াকে আবার মহান করে তুলি।”
এদিন সমাজমাধ্যমের পোস্টে নিজেকে বিশ্বশান্তির দূত বলে দাবি করেন ট্রাম্প। জানান, প্রথম দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকার সময় সার্বিয়া এবং কসোভার মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে লাগাম পরিয়েছেন তিনি। এমনকী নীল নদের উপর একটি বাঁধ নির্মাণকে কেন্দ্র করে মিশর এবং ইথিওপিয়ার মধ্যে যে সংঘাত, তাও তাঁর হস্তক্ষেপ থমকেছে। এবং আবারও ভারতের আপত্তি উড়িয়ে ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁর দেওয়া বাণিজ্যের শর্তেই ভারত ও পাকিস্তানের ‘দুই দুর্দান্ত নেতা’ সংঘাত থামান। বলা বাহুল্য ‘দুই দুর্দান্ত নেতা’ বলতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের কথাই বলেছেন ধনকুবের প্রেসিডেন্ট।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরানোর কথা বললেও ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের পিছনে ট্রাম্পের হাত দেখছেন বিশ্লেষকরা। তেহরানকে পরমাণু চুক্তি নিয়ে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছিল আমেরিকা। শর্ত না মানলে ভয়ংকর হামলারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। সাম্প্রতিক যুদ্ধের আগেভাগে নিজেদের দূতাবাসগুলি থেকে লোক কমায় আমেরিকা। অর্থাৎ আগেভাগেই ইরানের হামলার বিষয়টি জানত ওয়াশিংটন। সেকথা সরাসরিই জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টও। এমনকী ইজরায়েলের হামলার জন্য ইরানকেই দায়ী করেন তিনি। যুদ্ধের মাঝেই ইরানকে হুমকি দিয়েছেন, আমেরিকার উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করল ‘তছনছ’ করে দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে নরমে-গরমে জটিল কূটনৈতিক চাল দিচ্ছেন ট্রাম্প।