সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডামাডোল অব্যাহত ভারতীয় ফুটবলে। মাত্র দু’টো দিন আগেই ফেডারেশনের তরফে যে বার্ষিক ক্যালেন্ডার প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে ছিল না আইএসএলের দিনক্ষণ। আর এদিন জানা গেল ফেডারেশনের কাছে কয়েক প্রস্থ প্রস্তাব জানিয়েছে ফুটবল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড বা এফএসডিএল। সেখানে আইএসএলে অবনমনের উপর ১০ বছরের স্থগিতাদেশের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এফএসডিএলের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত কোনও মউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। আর এই আবহে এমন প্রস্তাবে কার্যত বেকায়দায় পড়তে পারে ফেডারেশন। এমনিতেই যথেষ্ট চাপে রয়েছে তারা। আইএসএল থেকে এখনও মোটা অঙ্কের টাকা বকেয়া রয়েছে ক্লাব ও ফ্র্যাঞ্চাইজির। আর এই অবস্থায় নতুন পরিকল্পনার কথা ইতিমধ্যেই পেশ করেছে এফএসডিএল। সেখানে খরচ কমানোর দিকেই মূল নজর রেখেছে তারা।
খরচ কমাতে কী কী পরিকল্পনা করছে এফএসডিএল? প্রথমত, ১২টি দল নিয়ে লিগ করার পরিকল্পনা থাকছে। জানা গিয়েছে, একটি বিশেষ বোর্ডও তৈরি হতে পারে। তাতে থাকবে ক্লাব, এফএসডিএল এবং ফেডারেশন কর্তারা। এবং তাঁরাই লিগ পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। তবে বাস্তব হল, এফএসডিএলের এই ‘মাস্টারপ্ল্যান’ কার্যকর হলে মূল সমস্যায় কিন্তু পড়তে পারে ফেডারেশন। কারণ সেই সময় ৬০ শতাংশ শেয়ার থাকবে ক্লাব ও ফ্র্যাঞ্চাইজির হাতে। ২৬ শতাংশ শেয়ার পাবে এফএসডিএল। বাকি মাত্র ১৪ শতাংশ ফেডারেশনের।
ফেডারেশনের লক্ষ্য ছিল ১৬ দলের লিগ করা। সেই স্বপ্ন কিন্তু বাস্তব হয়নি। এরই মধ্যে আবার দেশের সর্বোচ্চ লিগে অবনমন চালু নিয়েও মতভেদ তৈরি হয়েছে। এতদিন আই লিগ চ্যাম্পিয়নরা সরাসরি আইএসএল খেলার সুযোগ পেত। কিন্তু এতে আসলে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। সেই কারণেই ফেডারেশনের সঙ্গে তাদের মতভেদও তৈরি হয়েছে। এখন তাদের একটাই লক্ষ্য, খরচ কমানো। সেই কারণে আগামী দশ বছর ১২টি দল নিয়ে আইএসএল করানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আর তাতে কোনও অবনমন থাকবে না। তবে, এক্ষেত্রে ফেডারেশন বিকল্প রাস্তা খুঁজবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই জটিলতার ফলে এফএসডিএলের সঙ্গে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের আলোচনা আর এগোয়নি। এদিকে এফএসডিএল নাকি কয়েকটি ক্লাবের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছে, মাস্টার রাইটস চূড়ান্ত না হলে আইএসএলের বল গড়ানো সম্ভব নয়। সমস্যা হল, সুপ্রিম কোর্ট ফেডারেশনের সংবিধান নিয়ে যতক্ষণ না নির্দেশ দিচ্ছে, ততক্ষণ এফএসডিএল-ফেডারেশন চুক্তি এগোবে না। ততদিন পর্যন্ত আইএসএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও হবে না। উল্লেখ্য, এফএসডিএলের সঙ্গে ফেডারেশনের চুক্তি হয়েছিল ২০১০ সালে। সেই থেকে বার্ষিক ৫০ কোটি টাকা পায় ফেডারেশন।