সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সবুজ প্রান্তর। খোলা মাঠ। পিছনে পাইনের সারি। ঠিক তার মাঝে স্বামীর নিথর দেহের পাশে বসে সদ্য বিবাহিতা যুবতী। সন্ত্রাসবাদের ছবি হয় কী? এটাই হয়তো সেই ছবি! যা দেখে আঁতকে উঠেছে গোটা বিশ্ব। সেই সময় চোখের জল শুকিয়ে গিয়েছিল যুবতীর! কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দিল্লি বিমানবন্দরে স্বামীর কফিনের সামনে সেই জমিয়ে রাখা স্তব্ধতাই যেন আকাশ ভেঙে নেমে এল অশ্রু হয়ে!
দিন সাতেক আগে বিয়ে হয় হরিয়ানার হিমাংশী নরওয়াল ও বিনয় নরওয়ালের। ‘হানিমুনে’ ঘুরতে যান ভূস্বর্গে। কে জানত সেখানে অপেক্ষা করে আছে মৃত্যু! যখন ‘মিনি সুইৎজারল্যান্ড’ বৈসারনে ঘুরছিলেন, তখনই হামলা চালায় জঙ্গীরা। বিনয়কে লক্ষ্য করে চলে গুলি। একটা কানফাটানো শব্দে সব শেষ!
পরে জানা যায় বিনয় নৌসেনার লেফটেন্যান্ট। দু’বছর আগে বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। কর্মসূত্রে তিনি পোস্টিং ছিল কোচিতে। গত ১৬ এপ্রিল তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর বিবাহ সম্পর্কিত অন্যান্য অনুষ্ঠান মিটিয়ে স্ত্রী হিমাংশিকে নিয়ে মধুচন্দ্রিমার জন্য কাশ্মীরে রওনা হন বিনয়।
বুধবার দিল্লি বিমানবন্দরে বিনয়ের কফিনবন্দি দেহের সামনে সাদা কাপড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন হিমাংশি। যে হাতের মেহেন্দির মোছেনি এখনও, সেই হাতে স্বামীর কফিনের হাত বোলাতে থাকেন তিনি। বলতে থাকেন, “তোমার জন্য গর্বিত। ভালো থেকো।” তারপরই আকাশ ভাঙা কান্না। কিছুটা নিজেকে সামলে বলেন, “যেখানে থাকত মাতিয়ে রাখত সবাইকে। আমরা ওঁর জন্য গর্বিত, ওঁর জন্য আমরা সকলে বেঁচে আছি। আত্মার শান্তি কামনা করি।”
মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় মারা গিয়েছেন ২৬ জন। কয়েকজন জঙ্গি পুলিশ বা সেনার পোশাক পরে হামলা চালায়। গোটা বিশ্বে এই ঘটনার নিন্দা হচ্ছে। ‘কাউকে ছাড়া হবে না’ বলে ইতিমধ্যে কড়া বার্তা দিয়েছে কেন্দ্র। জরুরি বৈঠকে বসেছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে চলছে হাইভোল্টেজ বৈঠক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল-সকলেই রয়েছেন সেখানে।