রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: নিজেকে মহিলা ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিতেন। অভিযোগ, প্রসূতিদের সঙ্গে ভিডিওকলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে যৌন হেনস্তা করা হত। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ভুয়ো চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। এই ভুয়ো চিকিৎসকের পর্দাফাঁস হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার রানাঘাটে। বর্ধমান থেকে ওই গুণধরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোনও বড় চক্র কাজ করছে কি? সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
সূত্রের খবর, গত বুধবার এই বিষয়ে একটি অভিযোগ ওঠে। জনৈক এক ব্যক্তি নিজেকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে রানাঘাট পুরসভার নার্সিং বিভাগে ফোন করেন। পুরসভার আশাকর্মীদের এলাকার প্রসূতিদের বাড়ি গিয়ে তাঁর নম্বর দিতে বলেন। চিকিৎসক বলেছেন ভেবে, সাতপাঁচ না ভেবেই পুরসভার নার্সিং বিভাগ বিভিন্ন আশাকর্মীদের সেই নির্দেশ দিয়েও দেয়। এরপরই রানাঘাট পুরসভা এলাকার বাসিন্দা এক প্রসূতির অভিযোগ, চিকিৎসক পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি ভিডিওকলে যৌন হেনস্তা করেছেন! এই বিষয়ে রানাঘাট থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়। পরে আরও বেশ কিছু এমন অভিযোগের কথাও শোনা যায়।
পুরসভার পক্ষ থেকেও রানাঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে। ভিডিওকল আসা ওই মোবাইল নম্বরের লোকেশন ট্রেস করা হয়। দেখা যায় সেই লোকেশন বর্ধমান দেখাচ্ছে। এরপরই রানাঘাট থানার আইসি-র নেতৃত্বে বিশেষ দল বর্ধমান গিয়ে শুক্রবার রাতেই ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, তিনি কোনও ডাক্তার নন। ভুয়ো পরিচয় দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, একাধিক সিম কার্ড ব্যবহার করতেন এই গুণধর। বিভিন্ন পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকায় নিজেকে স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিতেন তিনি। আশাকর্মীদের মাধ্যমে নম্বর ছড়িয়ে দিয়ে ভিডিওকল করা হত বলে অভিযোগ।
কী কারণে ভিডিওকলে এমন কুকীর্তি? ব্ল্যাকমেলের জন্য কি ভিডিওকল করা হত? নাকি ডার্ক ওয়েবসাইটে ওইসব ভিডিওকলের স্ক্রিন রেকর্ডিং বিক্রির ছক আছে? সেসব বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃতকে এদিন রানাঘাট আদালতে তোলা হয়। নিজেদের হেফাজতে নিয়ে ধৃতকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।