টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: সকাল-বিকাল গ্রামে একটাই শব্দ, ‘ভনভন…’। এক মনে কাজ করার কোনও উপায় নেই। কখনও হাতের উপর, কখনও পায়ের উপর অবাধে বসা। নাকমুখের সামনে দিয়ে ক্রমাগত উড়ে বেড়ানো। খাওয়ার সময় খাবারে পর্যন্ত মাছি বসছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ বাসিন্দাদের কারও যেন শান্তি নেই। মাছির উপদ্রবে কার্যত নাস্তানাবুদ, বিরক্ত গ্রামের সাধারণ মানুষ। শয়ে শয়ে মাছির উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে এবার পথে নামলেন বাসিন্দারা। দীর্ঘ সময় পথ অবরোধ করে রাখা হল। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার কাশিবেদিয়া গ্রামে।
ওই গ্রামে রয়েছে মুরগির খামার। আর সেখান থেকেই গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে মাছির উপদ্রব। দীর্ঘদিন ধরে এই ঘটনা ঘটে চলেছে বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকের কালপাথর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিবেদিয়া গ্রামে। আজ বুধবার সকালে প্রতিকার চেয়ে পথে নামলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দীর্ঘক্ষণ ধরে অবরোধ করে রাখা হয় বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার সংযোগকারী রাস্তা। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধ করে রাখায় যানজট তৈরি হয়। খবর পেয়ে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে, সেই আশ্বাস দেওয়া হয়। পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পরেই ওই অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই এলাকায় তিনটি মুরগি খামার রয়েছে। অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় এই খামারগুলো ফেলে রাখার কারণে গ্রামজুড়ে মাছি ভনভন করছে। অভিযোগ, এর ফলে শিশু, বৃদ্ধ-সহ সাধারণ মানুষ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা বিমলা মণ্ডল বলেন, “একদিকে গরম, অন্যদিকে মাছির অত্যাচার। ঘরে-বাইরে কোনও শান্তি নেই। আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা ও কীটনাশক ছড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।” ইলেকট্রিকের মশা মারার ব্যাট দিয়ে মাছি মারা হচ্ছে বলেও গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। ওই মুরগি খামারের ম্যানেজার সৌমেন কুণ্ডু বলেন, “আমরা নিয়মিত মাছি মারার কীটনাশক ছড়াই। তারপরেও ওই এলাকায় মাছি জন্মাচ্ছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
ঘটনার খবর পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে যান বাঁকুড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে মানুষের সমস্যা হচ্ছে গ্রামে। খামার কর্তৃপক্ষকে ডেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ওই এলাকায় আরও কীটনাশক ছড়ানো হবে।