রঞ্জন মহাপাত্র: সহজলভ্য, সস্তা পুষ্টিকর খাবার বলতে ডিম-ভাতের তুলনা নেই। গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত এলাকার দারিদ্রসীমার নিচে থাকা মানুষজনের কাছে তাও অনেক সময় সাধ্যের বাইরে। দিনে একবার পেট ভরে সেটুকু খেতে পেলেই পরম তৃপ্তি বোধ করেন তাঁরা। আর সেসব মানুষই ‘মা-মাটি-মানুষ’ নিয়ে গড়া তৃণমূল কংগ্রেসের মূল ভিত্তি, সর্বোচ্চ শক্তি। তাই ২১ জুলাই, শহিদ দিবসের মতো দলের মেগা ইভেন্টে এই জনসাধারণের যোগদান প্রত্যাশিতই। জেলা জেলা থেকে তাঁদের সকলের পথ আজ কলকাতামুখী। রাত পোহালেই ২১ জুলাই, তৃণমূলের শহিদ দিবস উদযাপন। রবিবার থেকেই দলীয় কর্মী থেকে সমর্থকরা কলকাতায় আসছেন। নিজেদের খাবারও নিয়ে আসছেন তাঁরা। তবে এবারের চমকপ্রদ বিষয় একটিই – বরাবরের মতো একুশে জুলাইয়ের ‘ডিম্ভাত’ মেনুতে বদল এসেছে। তমলুকে সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব এবার মাংস-ভাত রান্না করে পাঠিয়েছে কর্মীদের জন্য।
প্রতি বছর ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে কর্মী, সমর্থকদের জমায়েত থেকে খাওয়াদাওয়ার দায়িত্ব থাকে সংশ্লিষ্ট জেলা নেতৃত্বের উপর। মধ্যাহ্নভোজের মেনু হিসেবে এতদিন যাবৎ ডিম-ভাতের ব্যবস্থা করা হয়েছিল লাখো লাখো সমর্থকের জন্য। একুশের সমাবেশে যোগদানকারী সকলেই কলকাতায় ছড়িয়ে থাকা তৃণমূলের শিবিরগুলি থেকে ডিম-ভাত খাওয়ার সুযোগ পান। এর আয়োজক জেলা নেতৃত্বই। এই ডিম-ভাত খাওয়ানো নিয়ে কম রসিকতা সহ্য করতে হয়নি রাজ্যের শাসক শিবিরকে। এমনকী এমন অসংবেদনশীল কথাও শোনা গিয়েছিল, ওই ডিম-ভাত খেতেই নাকি দূরদূরান্ত অধিকাংশ মানুষ কলকাতায় এসে তৃণমূলের শহিদ সমাবেশে যোগ দেন। তবে এবছর সেই রসিকতার সুযোগ কিছুটা অন্তত কমছে। এবার তমলুক সাংগঠনিক জেলার তরফে আর ডিম-ভাত নয়, চিকেন-ভাতের আয়োজন করা হয়েছে। মেনুতে থাকছে ভাত, আলুভাজা, চিকেন আর চাটনি।
এনিয়ে তমলুক টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া জানিয়েছেন, ”তমলুক থেকে সাড়ে চার হাজার কর্মী যাচ্ছেন ধর্মতলায় দলীয় সমাবেশে যোগ দিতে। মোট ৫৫ টি বাস ছাড়া হবে। তাতেই সকলে কলকাতা যাবেন। এতটা রাস্তা, কর্মীদের যাতে খাওয়াদাওয়ার কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য মাংস-ভাত রান্না করে বাসে তুলে দেওয়া হচ্ছে। মোট ৮ কুইন্ট্যাল মুরগির মাংস রান্না হয়েছে।” বাস ধর্মতলায় পৌঁছনোর পর সমাবেশে যোগ দেওয়ার আগেই কর্মী, সমর্থকরা মাংস-ভাত খাওয়া সেরে ফেলবেন। পেট ভরে খেয়ে তারপর শুনবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, গ্রহণ করবেন ছাব্বিশের নির্বাচনী লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রয়োজনীয় শক্তি।