উর্দিধারীদের কড়া নজরে শান্তিতেই মিটল রামনবমী ‘উৎসব’! বিজেপির খোঁচা, ‘রাস্তায় এত পুলিশ কেন?’

উর্দিধারীদের কড়া নজরে শান্তিতেই মিটল রামনবমী ‘উৎসব’! বিজেপির খোঁচা, ‘রাস্তায় এত পুলিশ কেন?’

জ্যোতিষ খবর/ASTRO
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলায় কার্যত শান্তিপূর্ণ রামনবমী! কোথাও কোথাও অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল বটে তার মধ্যেও নজর কেড়েছে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির ছবি। লাড্ডু বিলি থেকে মিছিলে পুষ্পবৃষ্টি, মন কেড়েছে এমনই টুকরো-টুকরো ছবি। আর শান্তিপূর্ণ রাম নবমী পালনের সিকিভাগ কৃতিত্বই যায় পুলিশ প্রশাসনের ঝুলিতে। নবান্ন থেকে প্রত্য়ন্ত এলাকার অলি-গলি, সর্বত্রই সতর্ক ছিল পুলিশ। উর্দিধারীদের এই কর্তব্য পরায়ণতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ধর্ম যার- যার, উৎসব সবার’ এই প্রবাদ প্রতিফলিত হল রামনবমীর মিছিলে। যদিও বিজেপির খোঁচা, ‘রাস্তায় এত পুলিশ কেন?’ পালটা দিল তৃণমূলও।

বাংলায় এমনিতেই বারো মাসে তেরো পার্বণ। তার মধ্যে অন্যতম রামনবমী। বছর খানেক আগেও গ্রাম-শহরের বহু পরিবারে চৈত্রের শেষে অন্নপূর্ণা, বাসন্তী পুজো হলেও আলাদা করে রামনবমী পালনের চল সেই অর্থে ছিল না। হালফিলে রামনবমী উপলক্ষে শহর থেকে গ্রাম, রাস্তা মুড়ছে গেরুয়া ধ্বজায়। রাস্তায়-রাস্তায় মিছিল। সেখানে আবারের অস্ত্রের প্রদর্শনী, বাইক মিছিল, লাঠি খেলা-র মতো বিষয় ঘটছে। গত কয়েক বছর ধরে কিছু-কিছু এলাকায় এই ধরনের মিছিল ঘিরে আইনশৃঙ্খলার বিঘ্নিত হচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠছিল। এবছরও রামনবমীর আগে থেকেই হুঙ্কার দিচ্ছিলেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, “রাস্তায় দেড় কোটি হিন্দু নামবে। রাত দশটার মধ্যে বাংলা দখল হবে।” রাস্তায় মানুষ নেমেছিল ঠিকই। অলি-গলি কিংবা রাজপথে মিছিলও হয়েছে, কিন্তু পুরোটাই বাংলার নিজস্ব স্টাইলে, উৎসবের মেজাজে। সেই মিছিলে শুধু হিন্দুরা নন, অংশ নিয়েছিলেন মুসলিম ধর্মাবলম্বীরাও। কিছু মিছিলে অস্ত্রের খেলা দেখা গেলেও পুলিশি সতর্কতায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে পুলিশ অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সতর্ক করেছে। প্রয়োজনে রুট বদল করিয়েছে শোভাযাত্রার।

রামনবমী নিয়ে বিজেপি ‘যুদ্ধ যুদ্ধ’ পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করলেও মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততায় সেই পরিকল্পনায় জল পড়েছে। সঙ্গে ছিল পুলিশি তৎপরতা। নবান্নে পুলিশের কন্ট্রোল রুমে ছিলেন এডিজি, আইনশৃঙ্খলা খোদ জাভেদ শামিম। ছিলেন পুলিশের অন্যান্য শীর্ষকর্তারাও। রাজ্যের দশটি জেলা ও পুলিশ কমিশনারেটকে আগেই ‘সংবেদনশীল’ বলে ঘোষণা করে বাড়তি সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছিল। এই তালিকায় ছিল আসানসোল, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ জেলা ও জেলার কমিশনারেট। ওই দশটি জেলা ও পুলিশ কমিশনারেটে ২৯ জন দুঁদে আইপিএস অফিসারকে পাঠানো হয়। কোনও ধরনের গোলমাল শুরু হলেই যাতে দ্রুততার সঙ্গে ব‌্যবস্থা নেওয়া যায়, সেদিকে বাড়তি নজর ছিল পুলিশের। আর পুলিশ প্রশাসন আর আমজনতাক মিলিত নীল নকশাতেই কাবু রামনবমীতে ‘অশান্তি’ ছড়ানোর ছক।

পুরো বিষয়টি নিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, রামনবমীতে এত পুলিশ কেন? জবাবে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের জবাব, “ওঁর অসুবিধা কেন হচ্ছে? রাজ্যে শান্তিপূর্ণভারে রামনবমী হয়েছে। ওরা (বিজেপি) কিছু জায়গায় অশান্তির হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিল। সেখানে অতিরিক্ত সতর্কতা ছিল।” সবমিলিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সতর্কতা আর কর্তব্য পরায়ণতায় রাজ্যজুড়ে মোটামুটি শান্তিতেই মিটল রামনবমী।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *