শমিদীপ দত্ত, শিলিগুড়ি: জংশন থেকে বাসে তরুণী পাচার কাণ্ডে (Younger lady trafficking case) পুলিশের করা স্বতঃপ্রণোদিত মামলা ছাড়া আর কোনও অভিযোগই দায়ের হয়নি। ৩৪ জন তরুণী নিজেদের পরিবারের কাছে ইতিমধ্যেই ফিরে গিয়েছেন। তবে কোনও পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ পুলিশের কাছে দায়ের করা হয়নি। এমনকি আদালতেও কেউ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরব হননি।
এই পরিস্থিতিতে তদন্ত বেশিদূর আর এগোনোর সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন পুলিশের পদস্থ কর্তারা। প্রধাননগর থানার পুলিশের অবশ্য দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা জানিয়েছেন, প্রতি ক্যান্ডিডেট হিসেবে নির্দিষ্ট টাকা কমিশন পেতেন তাঁরা। যদিও অভিযুক্তদের পাশেই দাঁড়িয়েছে ওই তরুণীরা। এমনকি ঘটনার মূল অভিযুক্ত পিত্রুশ বেককে দরাজ সার্টিফিেকট দিয়েছে তাঁর বাগানের মানুষজন। এলাকার অনেককে পিত্রুশ চাকরিও দিয়েছে বলে তাঁর প্রতিবেশীরাই দাবি করেছেন। এই পরিস্থিতিতে ঠিক কী কারণে পুলিশ প্রশাসন মনে করছে, ওই তরুণীদের পাচার করা হচ্ছিল, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
শিলিগুড়ি (Siliguri) মেট্রোপলিটান পুলিশের ডিসিপি (ওয়েস্ট) বিশ্বচঁাদ ঠাকুর বলছেন, ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারে কারও অথরাইজেশন ছিল না। ওই তরুণীদের কাজে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে প্রাসঙ্গিক কোনও নথি অভিযুক্তরা দেখাতে পারেননি। তাঁদের চা বাগান এলাকায় গিয়ে ট্রেনিং দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই সংক্রান্ত কোনও নথি তাঁরা দেখাতে পারেনি। ট্রেনিং করানোর ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়নি।’
শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটান পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখতে পেরেছি, অন্য শহরে নিয়ে যাওয়ার পর প্রথম প্রথম পরিবারের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়ে থাকে। চার-পাঁচ মাস পর টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর তরুণীদের অন্য কাজে ব্যবহার করা শুরু হয়।’
পুলিশের থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, উদ্ধার হওয়া ৩৪ তরুণীর মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলার ২৪ জন রয়েছেন। এঁদের মধ্যে মেটেলি থানার রয়েছেন ১৪ জন, নাগরাকাটার ৪, মালবাজার থানার ৩ জন রয়েছেন। বানারহাট, ময়নাগুড়ি ও কোতোয়ালি থানার একজন করে তরুণী রয়েছেন। অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি থানার আওতায় ৪ ও শামুলতলা থানার আওতায় ৫ জন রয়েছেন। এছাড়াও দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ি থানার একজন রয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, পিত্রুশের সঙ্গে গৌতমের দীর্ঘদিন ধরেই পরিচয় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা তরুণীদের দক্ষিণ ভারতে প্লেসমেন্ট সেন্টারে দিয়ে যাচ্ছেন। গৌতমের সঙ্গে এই সূত্র ধরেই পরিচয় জয়শ্রীর। কমিশনের সুবিধা থাকায় জয়শ্রী মাসকয়েক ধরে গৌতমদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।